ছদ্মবেশ নিয়েও শেষ রক্ষা হলো না দণ্ডিত ‘খুনির’
১৪ আগস্ট ২০২২ ১৭:৪৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া এক আসামিকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ওই আসামি ঢাকায় পালিয়ে গিয়ে বেশভূষা পাল্টে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
রোববার (১৪ আগস্ট) ভোরে ঢাকার তুরাগ থানার কামারপাড়া এলাকা থেকে তোতা মিয়া নামে ওই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। তার বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায়।
২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি রাতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রানীরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ফটকের কাছে জিল্লুর রহমান ওরফে জিল্লুর ভাণ্ডারিকে মারধরের পর গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ আজিম উদ্দিন রাঙ্গুনিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তোতা মিয়া।
র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ সংবাদ সম্মেলনে জানান, হত্যাকাণ্ডের পর গ্রেফতার করা হয়েছিল এজাহারভুক্ত আসামি তোতা মিয়াকে। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে সপরিবারে ঢাকায় চলে যান। ঢাকার উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরে বাসা ভাড়া করে বসবাস শুরু করেন। বড় চুল, দাড়ি রেখে বেশভূষা পাল্টে ফেলেন। সেখানে প্রথমে ব্যটারিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। পরে সিএনজি অটোরিকশা চালানো শুরু করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জিল্লুর ভাণ্ডারি হত্যা মামলায় ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিল সিআইডি। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঘটনার তিন মাস আগে জিল্লুর ভাণ্ডারির ভাই মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বাবলুকে কাতার নিয়ে যান আসামি ইসমাইলের ভাই মোহাম্মদ জব্বার। সেখানে যাওয়ার পর বাবলু বুঝতে পারেন, তার ভিসা নিয়ে জটিলতা আছে। এ নিয়ে বাবলুর সঙ্গে জব্বারের কথা কাটাকাটি হয়। পরবর্তী সময়ে বাবলুর ভিসা বাতিল করে তাকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেন জব্বার।
২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি রাতে জব্বারের ভাই ইসমাইলকে রানিরহাট বাজারে পেয়ে জিল্লুর ভাণ্ডারি তার ছোট ভাইকে দেশে ফেরত পাঠানোর কারণ জানতে চান। এ সময় ভিসা বাবদ দেওয়া টাকা ফেরত চান জিল্লুর। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরদিন রাতে জিল্লুরকে একা পেয়ে মারধর করে আসামিরা। এক পর্যায়ে তার পায়ে গুলি করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে রাতেই তার মৃত্যু হয়।
২০১৯ সালের ২৮ মে ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলার অভিযোগপত্রে মোট ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন- শহীদুল ইসলাম খোকন ও ইসমাইল। এছাড়া আবু, কামাল, জসিম, তোতা মিয়া, নাছির ও সুমনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম