Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুই রেগুলেটর থাকলে ওটিটি ব্যবসার পরিবেশ থাকবে না: নাভিদুল হক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৩ আগস্ট ২০২২ ১৮:০৬ | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২২ ১৯:২৩

ঢাকা: দেশি-বিদেশি ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য একই রকম সুবিধা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গবিডির পরিচালক ও সহ-উদ্যোক্তা নাভিদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি ইউনিক দেশ, যেখানে একটি ইন্ড্রাস্ট্রিকে (ওটিটি) নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দুটি রেগুলেটর। দুটি রেগুলেটর একসঙ্গে কাজ করলে এইখাতে ব্যবসার পরিবেশ থাকবে না।

শনিবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবনে এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘রেগুলেশন অব ডিজিটাল, সোস্যাল মিডিয়া অ্যান্ড অটিটি প্ল্যাটফর্মস: দ্য নিড টু স্ট্রাইক দ্যা ব্যালেন্স’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

নাভিদুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ইউনিক দেশ, যেখানে একটি ইন্ড্রাস্ট্রিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দুটি রেগুলেটর। এখানে ভারতের আলোচনা হয়েছে। ভারতে কিন্তু একটি রেগুলেটর। প্রথমেই জিনিষটিকে আমরা হয়ত কপ্লিকেটেড করে ফেলছি। কেন দুটি রেগুলেটর হচ্ছে? তিনি বলেন, বিটিআরসিকে ধন্যবাদ জানাই তারা কিছুটা পরিবর্তন এনেছে, তাদের অ্যাপ্রোচে। তারপরেও কিন্তু ইজ অব ডুয়িং বিজনেস এখানে থাকবে না, যদি দুটি রেগুলেটর এখানে অপারেট করে। বাংলাদেশে যেটি হয়, রেগুলেটর শুধু ভয় দেখায়। আমরা ওটিটি অপারেটর এখানে কিন্তু বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছি। বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠান যে সুবিধা পাচ্ছে, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোও একই সুবিধা পাচ্ছে। আমাদের গ্রাহক কিন্তু একই। তাও ভাবতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রেগুলেশন দিয়ে আমাদের যেন ভয় দেখানো না হয়, রেগুলেশন যেন হয় আমাদের সাপোর্ট করার জন্য, আমাদেরকে রেস্ট্রিক্ট করার জন্য না। রেগুলেশন যেন সাধারণ জনগণের কণ্ঠকেও যেন রুদ্ধ না করে।’

বিজ্ঞাপন

নাভিদুল হক বলেন, ‘কপিরাইটের যে এনফোর্সমেন্ট হচ্ছে, সেটি কিন্তু ফেসবুক ও ইউটিউব করে দিচ্ছে। কোনো কিছু হলে দেশের মানুষ ফেসবুক ও ইউটিউবের কাছে কমপ্লেইন করছে, দেশ ও দেশের আইনে কিন্তু বিচার হচ্ছে না। কপিরাইট হচ্ছে, অনেক সময় দেখা যায় বিচার চেয়েও বিচার পাওয়া যাচ্ছে না, কিন্তু শক্তিশালী কেউ তার কন্টেন্ট নিয়ে কপিরাইটে গেলে সঙ্গে সঙ্গে বিচার হয়ে যাচ্ছে, এটি যেন না হয়। কপিরাইট আইন হলে সেটি যেন সবার জন্য সমান হয়।

ওটিটি প্ল্যাটফর্মের দেশীয় এই উদ্যোক্তা বলেন, ‘নেট নিউট্রালিটির (নিরপেক্ষতা) কথা বলা হচ্ছে। নিউট্রালিটি শুধু নেটে নয়, নিউট্রালিটি সব ক্ষেত্রে থাকতে হবে।’

মেটার বাংলাদেশ হেড অব পাবলিক পলিসি সাবনাজ রাশিদ দিয়া বলেন, ‘যে কোনো আইন করার সবাই স্টেকহোল্ডার, সুশীল সমাজ ও ব্যবসায়িক প্রতিনিধি সবার বক্তব্য নেওয়া উচিত। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া যে আইন করেছে সেটি ভালো উদাহরণ হতে পারে৷ ডিজিটাল লিটারেসি গুরুত্বপূর্ণ, মানুষকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বিটিআরসি ও তথ্য মন্ত্রণালয় কোনটা কি নিয়ন্ত্রণ করবে তা স্পষ্ট হওয়া দরকার।’

এফবিবিসিআইয়ের পরিচালক সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ‘আইন যেন মত প্রকাশ বা মুক্তচিন্তার অন্তরায় হয়ে না দাঁড়ায়। রেগুলেশন যেন এই উদীয়মান ব্যবসার প্রসারের পথে অন্তরায় না হয় তা লক্ষ্য রাখতে হবে। দেশীয় ও অন্তর্জাতিক ওটিটির জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকতে হবে। স্থানীয় ওটিটিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ওটিটি, আইপি টিভি, ভ্যাস এর মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য থাকা দরকার। ওটিটি প্ল্যাটফর্মের বৈশ্বিক বাজারের আকার ১৭৮ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৭ সাল নাগাদ ২৭৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে।’

এমন সম্ভাবনাময় বাজারে বাংলাদেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে শিল্পবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান তিনি।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম। মূল প্রবন্ধে খসড়া নীতিমালায় শাস্তির বিধানকে কমানো, নেট নিউট্রালিটি নিশ্চিত করা এবং প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজস্ব ও সরকারি নিয়ন্ত্রণে সমন্বয় আনার সুপারিশ করা হয়।

বিটিআরসির মহাপরিচালক (সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ বলেন, ‘হাইকোর্ট থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর বিটিআরসি ও তথ্য মন্ত্রণালয় ওটিটির খসড়া তৈরি করেছে। ১৯ অক্টোবরের মধ্যে ফাইনাল খসড়া জমা দিতে হবে। বিটিআরসির রেজিস্ট্রেশনে অর্থের কথা বলা হয়নি। ওটিটির কোনো সুর্নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। আমরা টেলিফোন অপারেটরদের নিয়ন্ত্রণ করি। অনলাইন দুনিয়ার যা আসে আমাদেরকে তাই নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়। আমরা ফেসবুককে দুটি কন্ট্রাক্ট পয়েন্ট দিতে বলেছিলাম। কিন্তু তা হয়নি।’

এদিকে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়কে ( তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ) একসঙ্গেই কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, ‘দুটি মন্ত্রণালয়- টেলিভিশন ও রেডিওর দায়িত্ব তথ্য মন্ত্রণালয়ের। দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। টেলিভিশনের স্পেক্ট্রাম নিতে হয় আমাদের কাছ থেকে। এখন আমাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট রয়েছে, তা দিয়েই দেশের টেলিভিশনগুলো সম্প্রচার কাজ চালাচ্ছে। অতএব দুই মন্ত্রণালয়কে এক সঙ্গেই কাজ করতে হবে।’

জব্বার আরও বলেন, ‘গাইডলাইন অথবা বিধিমালা যেটাই করি, আমরা কনসালটেশন করছি, এই গাইডলাইন দিয়ে ফেসবুক-ইউটিউবের সঙ্গে কনসালনটেশন করছি।’

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, আরটিভির সিইও সৈয়দ আশিক রহমান প্রমুখ।

আরও পড়ুন
ওটিটি নিয়ে দুই মন্ত্রণালয় একসঙ্গেই কাজ করবে: মোস্তাফা জব্বার

সারাবাংলা/ইএইচটি/একে

ওটিটি টপ নিউজ নাভিদুল হক বঙ্গবিডি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর