পৃথিবীর অনেক দেশের মেয়েরাই বঙ্গমাতার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে পারবে
৭ আগস্ট ২০২২ ১৩:২৫ | আপডেট: ৭ আগস্ট ২০২২ ১৪:৪০
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শুধু আমার দেশের মেয়েরা না, পৃথিবীর অনেক দেশের মেয়েরাই বঙ্গমাতার জীবনের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে পারবে। একজন মানুষ তার জীবনের সবকিছু ত্যাগ করেছেন একটি জাতির স্বাধীনতার জন্য, একটি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। কিন্তু তিনি কখনো ভেঙে পড়েননি।
রোববার (৭ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গমাতা : এ প্যারাগন অব উইমেন লিডারশিপ অ্যান্ড ন্যাশন-বিল্ডিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ।
১৫ আগস্ট পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে বঙ্গমাতার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার স্মৃতিচারণ করার সময় আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঘাতকের বুলেট তাকে কেড়ে নেয়। সংসারের ব্যাপারে, রাজনীতির ব্যাপারে, প্রতিটি ব্যাপারে তিনি যখন যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সেটা যে আমাদের দেশের জন্য কত সঠিক ছিল, আর শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের জীবনটাও দিয়ে গেলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গমাতা: এ প্যারাগন অব উইমেন লিডারশিপ অ্যান্ড ন্যাশন-বিল্ডিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সম্মেলন আয়োজনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার মায়ের যে এতো আত্মত্যাগ, তার জীবনে কোনো চাওয়া পাওয়া ছিল না। তিনি নিজের জন্য কোনদিন কিছু চাননি। আমরা শুনিনি আম্মা কোনো আবদার করেছেন। বরং নিজের যতটুকু ছিল সবি তিনি বিলিয়ে দিতেন। দলের জন্য, মানুষের জন্য, গরীব আত্মীয় পরিবার পরিজনের জন্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হবে, কারণ আব্বা কিন্তু অনেক কথা মার সঙ্গে শেয়ার করতেন, মাকে বলতেন, আমরা জানতাম মাকে বলতেন, মা জানত কি হবে। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী যখন বন্দী করে নিয়ে গেল, সেই ১৮ নাম্বার রোড, বর্তমানে ৯/এ, ২৬ নম্বর বাড়ি একতলা একটি বাড়িতে আমাদের বন্দী করে রেখেছিল। সেখানে আমাদের মাটিতে থাকতে হতো ফ্লোরে, কোনো পর্দা ছিল না। ২৪ ঘণ্টা আমরা কোনো খাবার পাইনি। আমার মাকে কোনদিন ভেঙে পড়তে দেখিনি।
তিনি বলেন, আমার বাবার পাশে থেকে থেকে যেভাবে তিনি সাহস দেখিয়েছেন, আমি মনে করি আমার দেশের মেয়েরা শুধু না পৃথিবীর অনেক মেয়েরাই তার জীবনের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে পারবে। একজন মানুষ তার জীবনের সবকিছু ত্যাগ করেছেন একটি জাতির স্বাধীনতার জন্য, একটি দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য। আমি চেষ্টা করেছি, সরকারে আসার পরে আমাদের দেশের মেয়েদের জন্য যা যা করার করতে। কারণ আমার মা পড়াশোনা হয়ত সেভাবে করতে পারেননি দেখে তার মনে খুব আপসোস ছিল। আমাদের পড়াশোনার প্রতি তিনি খুব গুরুত্ব দিতেন এবং এদেশের মেয়েরা যেন উঠে দাঁড়াতে পারে সেটাই তার চিন্তা ছিল।
সারাবাংলা/এনআর/এসএসএ