অনুমান নির্ভর তথ্যের দিন শেষ হয়েছে: স্পিকার
২৭ জুলাই ২০২২ ১৮:০৩
ঢাকা: জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, অনুমান নির্ভর তথ্যের দিন শেষ হয়ে গেছে। এর আগে কেউ বলতো দেশের জনসংখ্যা ১৮ কোটি, আবার কেউ বলতো ২০ কোটি। তারা অনুমান নির্ভর কথা বলতো। কিন্তু জনশুমারির তথ্য আসায় এখন সঠিক তথ্য হচ্ছে সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ আছে এই দেশে।
বুধবার (২৭ জুলাই) ‘জনশুমারি ও গৃহগণণা-২০২২’র প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। বক্তব্য দেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন এবং পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মতিয়ার রহমান। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জনশুমারি প্রকল্পের পরিচালক দিলদার হোসেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা কিছুটা বেশি। তাই দেশের উন্নয়নের মূলধারায় নারীদের সম্পৃক্ত করাটা কতটা জরুরি তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে বলে মত দেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘প্রতিবেদন তৈরির কজ সুক্ষ্মভাবেই করছে বিবিএস। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে দ্রুতই সব তথ্যের পরিবর্তন হচ্ছে। তাই তথ্যের চাহিদা পূরণে বিবিএস’র সঠিক তথ্য-উপাত্ত ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’
ড. শিরীন শারমিন বলেন, ‘নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য না হলে অনেক সমস্যা হতে পারে। এজ্যন্য সঠিক জায়গা থেকে সঠিক তথ্য দিয়ে বিবিএস আমাদের সমৃদ্ধ করছে। আমাদের তরুণ জনগোষ্ঠী অনেক বেশি শক্তিশালী। ১৫ থেকে ১৯ বছরের জনগোষ্ঠী আছে ৩৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এছাড়া ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী জনগোষ্ঠী ৪৭ দশমিক ৭২ শতাংশ। অপরদিকে, বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কম আছে। তরুণদের কাজে লাগাতে কাজ করছে সরকার।’
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘চার লাখ ট্যাব কেনা হয়েছে ১১ হাজার ৩০০ টাকা করে। এইসব ট্যাবের পেছনে কাজ করেছেন চার লাখ তরুণ-তরুণী। তারা অল্প কয়েকদিন কাজ করেই আট হাজার টাকা করে পেয়েছেন। এতে তদের উপকার হয়েছে। আমরা যা কথা দিয়েছি তা রেখেছি। এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়া হলো। আর একটি কথা দেওয়া আছে, সেটি হলো এইসব তথ্যেও গোপনীয়তা রক্ষা করা হবে। সরকার ছাড়া কেউ এই তথ্যগুলো পাবে না। দেশে ভাসমান লোকের সংখ্যা কম। এর মানে হলো দরিদ্র্য মানুষের সংখ্যা কমছে। নির্ভরশীল জনসংখ্যার হার কমেছে। জনমিতির সুবাতাস পাওয়া যাচ্ছে। সংশয়বাদীদের বলব, বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে সম্পুর্ণ পেশাদারিত্ব নিয়ে কাজ করা হয়েছে। তারপরও ভুল-ক্রুটি থাকলে সেগুলো সংশোধন করা হবে।’
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ডিজিটাল সুযোগের কারষে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে। যেমন- করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ দুর্যোগময় সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে সঠিক তথ্যেও কারনে। সঠিক পরিকল্পনার জন্য সঠিক তথ্য গুরুত্বপূর্ণ।’
ড. শামসুল আলম বলেন, ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মূল্যায়ন এবং বদ্বীপ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ও মধ্যবর্তী মূল্যায়নে জনশুমারির তথ্য বিশ্বে ভূমিকা রাখবে। এসডিজির ১০৫টি লক্ষ্যের তথ্য আসবে এই জনশুমারি থেকেই।’
ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘আমরা জাতিগতভাবে নেগেটিভ কথা শুনতে পছন্দ করি। কিন্তু আজ জনশুমারির তথ্যের মাধ্যমে অনেক নেগেটিভ ধারণা কমে যাবে। বিবিএস গর্ব করার মতো একটা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। দেশে বস্তির সংখ্যা কমেছে। এর মানে হচ্ছে মানুষের অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। অনেক সময় মানুষ ধারণা করে অনেক বস্তিবাসী আছে। কিন্তু বাস্তবতা তো ভিন্ন।’
ড. শামনাজ আরেফিন বলেন, ‘সিলেটসহ দক্ষিণাঞ্চলে বন্যার কারণে মানুষ গণণার কাজ কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এক মাসের মধ্যেই প্রাথমিক প্রতিবেদন দিতে পারাটা অনেক বড় বিষয়। যেটি সকলের সহায়তায় করা সম্ভব হয়েছে।’
সারাবাংলা/জেজে/পিটিএম