শাশুড়িকে আঘাত, ধরতে গিয়ে পুলিশ পেল পুত্রবধূর লাশ
২১ জুলাই ২০২২ ২০:০২ | আপডেট: ২১ জুলাই ২০২২ ২৩:১৩
মানিকগঞ্জ: ইদুল ফিতরের পরদিন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার কাকজোর গ্রামের রহম আলীর মেয়ে কলেজ পড়ুয়া সুমী আক্তারের সঙ্গে বিয়ে হয় একই উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের শোলধানা গ্রামের রুপক আহমেদের। মাস তিনেক পর হঠাৎ পুলিশের কাছে ফোন, শাশুড়িকে গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছেন সুমী। খবর পেয়ে পুলিশ হাজির সুমীর শ্বশুরবাড়িতে। কিন্তু সেখানে গিয়ে পুলিশ হতবাক। ঘরের মধ্যে পড়ে রয়েছে সুমীর গলাকাটা মরদেহ!
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) ঘটেছে এমন ঘটনা। বিকেলে বানিয়াজুরী ইউনিয়নের শোলধানা গ্রামে গিয়ে গৃহবধূ সুমীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে মানিকগঞ্জের শিবালয় সার্কেলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরজাহান লাবনী জানিয়েছে, সুমীর শাশুড়ির আহত হওয়ার তথ্যটিও মিথ্যা নয়।
এ ঘটনার পর থেকে সুমীর স্বামী রুপক আহমেদ পলাতক রয়েছেন। তার সুমীর পরিবারসহ স্থানীয়দের ধারণা, বিয়ের মাত্র তিন মাসের মাথায় রুপকই তার স্ত্রী সুমিকে হত্যা করেছে।
বানিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস আর আনসারী বিল্টু বলেন, দুপুরের দিকে সুমীর মা ও তাদের এক আত্মীয় আমার বাড়িতে আসেন। তারা বলেন, তাদের মেয়েকে (সুমী) খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে সুমীর শাশুড়িকে কে বা কারা গলায় আঘাত করেছে। এরপর থানায় থেকে ফোন পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, ঘরের ভেতরে সুমীর গলাকাটা লাশ পড়ে রয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরেই সম্ভবত হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরজাহান লাবনী বলেন, দুপুর আড়াইটার দিকে মানিকগঞ্জের একজন আইনজীবী ফোন করে আমাদের জানান, তার খালাতো বোন গলায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা প্রয়োজন। আমরা তার কাছে জানতে চাই, ওই নারী কীভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি জানান, ওই নারীর পুত্রবধূ আঘাত করেছেন তাকে।
নুরজাহান লাবনী বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমরা পুত্রবধূকে (সুমী) আটক করার জন্য শোলধারা গ্রামে যাই। সেখানে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। পরে ঘরের ভেতরের একটি স্টোর রুমে গিয়ে সুমীর গলাকাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখি। তার হাত পেছনের দিকে বাধা অবস্থায় ছিল।
পুলিশ ধারণা করছে, পারিবারিক কোনো কলহ বা বিরোধের জের ধরে সুমীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা হয়নি। সুমীর পরিবার থেকেও থানায় মামলা দায়ের করা হয়নি এখনো। আপাতত সুমীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন নুরজাহান লাবনী।
রুপকদের প্রতিবেশী নারগিস আক্তার বলেন, রোজার ইদের পর রুপক পাশের গ্রামের সুমী আক্তারকে বিয়ে করেছে। এই অল্প দিনের সংসারে এমন একটি ঘটনা ঘটবে, তা কল্পনাও করতে পারিনি।
সারাবাংলা/টিআর