‘গভর্নমেন্ট এখন সর্ষে ফুল দেখবে’
১৯ জুলাই ২০২২ ১৮:১২ | আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২২ ১৯:৫২
ঢাকা: ‘গভর্নমেন্ট এখন সর্ষে ফুল দেখবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনেতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের রিজার্ভের সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার তারা (সরকার) এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে দিয়েছে। এই টাকা কাদের দিয়েছে? তাদের সেসব লোকজনকে, যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করছে দেশ-বিদেশে এবং তারা এই টাকা নিয়ে বিদেশে পাচার করেছে, বাড়ি-ঘর বানিয়েছে। দেশে সেই টাকা আর আসছে না। এই তো শুরু, দিস ইজ আ বিগিনিং। এখন গভর্নমেন্ট সর্ষে ফুল দেখবে, দেখতে হবে। জনগণ ফুঁসে উঠছে, ফুঁসে উঠবে এবং তাদের (সরকার) পতন ত্বরান্বিত হবে।’
বিদ্যুতের লোডশেডিং অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে— এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত নির্ভর করে পোশাক শিল্পের ওপরে। সেই খাতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি চাহিদার ঘাটতি হলে সমস্যা তৈরি হবে, পরিবহনে সমস্যা তৈরি হবে। জ্বালানি তেল ও বিদ্যুৎ সম্পূর্ণভাবে অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িতে। সেখানে যখন র্যাশনিং সিস্টেম চালু করা হবে, তখন কিন্তু উৎপাদন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট থাকবে।’
‘এটি একটি টেম্পোরারি মেজার। একে কাটাতে হলে তাদের (সরকার) স্থায়ী সমধানের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। সেদিকে কিন্তু সরকার যাচ্ছে না। তারা দাম বাড়াচ্ছে না। দাম বাড়ালে জনগণ বিগড়ে যাচ্ছে,’— বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘যেসব পাওয়ার প্ল্যান্ট কাজ করছে না, তাদের পয়সা দিতে হবে। সেক্ষেত্রে কিন্তু বিরাট অংশ চলে যাচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডলারে পে করতে হয়। এই সমস্যাগুলো বলা যেতে পারে সামগ্রিক সমস্যা। এই সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা আগেই বলেছি যে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই এবং দুর্নীতি চরম জায়গা পৌঁছেছে। সব জায়গাতে তাদের একটাই লক্ষ্য— দুর্নীতি করা। এটা অস্বীকার করলে তো চলবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, “প্রতিটি সেক্টর আজ ‘পয়েন্ট অব নো রিটার্নে’ চলে গেছে। ৭টি দেশকে ওয়ার্নিং দেওয়া হচ্ছে যে শ্রীলংকার মতো অবস্থা তৈরি হতে পারে। এটা তো হয়ে যাচ্ছে…।’
কার্গো উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের প্রকৃত ঘটনা প্রকাশের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্থায়ী কমিটির সভায় গত ১৬ জুলাই সার্বিয়া থেকে বাংলাদেশে সমরাস্ত্র নিয়ে আসার সময় ইউক্রেনের একটি কার্গো বিমান বিধবস্ত হওয়ায় উদ্বেগ জানানো হয়। আইএসপিআরের দুই রকম বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়। সার্বিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর ভাষ্য ও আইএসপিআরের বক্তব্য সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের কাছে প্রকৃত তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়।’
ওয়াসার পানি ও ৫৩টি ওষুধের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ও নিন্দাও প্রকাশ করেছে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি। ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকার মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিবাদ সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান বিএনপির মহাসচিব।
সিইসির বক্তব্যকে হাস্যকর আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উনি (প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল) এখন হাস্যকর ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ ও ইলেকশন কমিশন মনে করে যে দেশের সব মানুষ আহম্মক। তাহলে তো হবে না। গত ১০ বছর ধরে প্রমাণ হয়েছে, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। এ কথা শামসুল হুদাও বলেছেন, শেষ মুহূর্তে কে এম নুরুল হুদাও তার চাকরি যাওয়ার পর বলেছেন। আর উনি এখনই বলে দিচ্ছেন যে এটা সম্ভব না, ইটস নট পসিবল। গতকালও তিনি বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে না এলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।’
সারাবাংলা/এজেড/টিআর