মঙ্গলবার থেকে লোডশেডিং, সপ্তাহে ১ দিন বন্ধ পেট্রোলপাম্প
১৮ জুলাই ২০২২ ১৬:৩৩ | আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২২ ১৯:৪৯
ঢাকা: গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লোডেশেডিংয়ের সময় হতে পারে কমপক্ষে দুই ঘণ্টা। একইসঙ্গে অন্তত সপ্তাহে একদিন দেশের সব পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জ্বালানি সংকট কমাতে ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই এলাহী চৌধুরী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সোমবার (১৮ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক সমন্বয় বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই এলাহী চৌধুরী বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত সাময়িক। বিশ্ব পরিস্থিতির উত্তরণ হলে আগের অবস্থানে ফিরে আসা হবে।’ তিনি জানান, জ্বালানি তেলের লোকসান কমাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবং তা সোমবার (১৮ জুলাই) থেকেই কার্যকর হচ্ছে।
আর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। তবে কীভাবে, কোন পদ্ধতিতে এই বাস্তবায়ন করা হবে তা পরে জানানো হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বন্দর এলাকায় সপ্তাহে দু’দিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার চিন্তা করছি। সরকারি অফিসগুলোর সময় কীভাবে কমিয়ে আনা যায় সেটাও চিন্তা করা হচ্ছে। তবে সে বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সমন্বয় করবে।’
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন বন্ধ রাখা হবে। আর বিদ্যুতের ঘাটতি কমাতে প্রাথমিকভাবে এক ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়া হবে। এতেও যদি ঘাটতির উত্তরণ না হয় সেক্ষেত্রে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং করা হবে। যেসব এলাকায় লোডশেডিং হবে, তা আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হবে। রাত আটটার পর সব দোকানপাট বন্ধ রাখা হবে। কেউ খোলা রাখলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া মসজিদে নামাজ শেষ হলে এসি বন্ধ রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু থেকে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। গত দুই বছরে তা পাঁচগুণ বেড়ে দাঁড়ায়। এ বছর রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সেই ঊর্ধ্বমুখী বাজার আরও বেড়ে যায়। বাড়তে থাকে এলএনজির দামও। ফলে খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ করে দেয় সরকার। এর সঙ্গে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি যোগ হয়। ফলে গ্যাস স্বল্পতার কারণে গ্যাসনির্ভর বেশকিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র সরবরাহে রাশ টানাটানি করে চলছিল। বাংলাদেশে চাহিদার তুলনায় যোগান কমে যাওয়ার বাজারে জ্বালানি সংকট দেখা দেয়। এই প্রেক্ষাপটে জ্বালানি সাশ্রয়ে এইসব সিদ্ধান্ত নিল সরকার।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম