Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কক্সাবাজারে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ইভটিজিং, প্রশাসনের নজরদারি বৃদ্ধি

ওমর ফারক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৮ জুলাই ২০২২ ০৮:৪৮

কক্সবাজার: শহরের গোলদিঘীর পাড় দিয়ে স্কুল ব্যাগ কাঁধে যাচ্ছে দুই কিশোরী। ঘোনার পাড়া অতিক্রমের সময় ৪-৫ জন যুবক তাদের গতিরোধ করে। তারা খুবই ‍উচ্ছৃঙ্খল এবং মারমুখী ছিল। তাদের মধ্যে একজন খুব অশ্লীল ভাষায় গালি দেওয়ার একপর্যায়ে কিশোরীর ব্যাগ টান দিয়ে মাঠিতে ফেলে দেয়। এতে দুই কিশোরী খুবই আতংকিত হয়ে পড়ে। চারপাশে অনেক মানুষ জড়ো হলেও প্রতিবাদ করার কেউ নেই। পরে স্থানীয় কিছু মুরব্বি প্রতিবাদ করলে রক্ষা পায় কিশোরী দুটি।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইমরান হাসান ও মোবারক নামে দুই কলেজছাত্র। যারা গোলদিঘীর পাড়ে বসে গল্প করছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই যুবকদের মধ্যে রবিন নামে একজন এক কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এই অবস্থা। রবিন হুমকি দেয় যদি প্রেমে রাজি না হয়, তাহলে স্কুল-প্রাইভেট সব বন্ধ করে দেবে।ৎ

এমন ঘটনা একটি-দুটি নয়। শহরে দিন দিন ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে ইভটিজিং। কখনো গতিরোধ, কখনো অশ্লিল ভাষা-অঙ্গভঙ্গি, আবার কখনো ওড়না ধরে টান দেওয়া। আবার ইভটিজারদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে পড়তে হয় বিপদে। তারা সঙ্গবদ্ধ এবং ভয়ংকর প্রকৃতির হওয়ায় অনেকে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। অনেক সময়ই এসব ঘ্টনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেক সহপাঠী, শিক্ষক, ভাই-বাবা, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনকে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে। মারধরের শিকার হয়েছে। এমনকি ইভটিজারদের হাতে খুন পর্যন্ত হয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, শহরের প্রায় ৫-৬টি পয়েন্টে ইভটিজারদের অবস্থান বেশি দেখা যায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন গোলদিঘীর পাড়া, বাইতুশ শরফ সংলগ্ন বইল্লা পাড়া, সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন বিমান বন্দর সড়ক সহ আরও ৫-৬ টি পয়েন্ট।

সম্প্রতি বেড়ে যাওয়া ইভটিজিং প্রসঙ্গে কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, মেয়েদের গায়ে হাত, কাপড় ধরে টান, পথ আগলে ধরা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে কিশোর গ্যাং এর ভয়ানক উৎপাত দৃশ্যমান। রুখে দাঁড়াতে হবে এদের। জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

বিজ্ঞাপন

এই স্ট্যাটাসের শত কমেন্টের (মন্তব্য) মধ্যে কক্সবাজারের বিকশিত নারী নেটওয়ার্ক এর সভাপতি শামীমা আকতার লিখেন, ‘ইভটিজিং একটি গর্হিত অপরাধ। এটির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলনসহ প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। অন্যথায় কন্যাশিশুরা পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়বে। নারীর অগ্রযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হবে।’

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, প্রশাসন সমসময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে। স্কুল-কলেজসহ যেসব পয়েন্টে ইভটিজিং এর আশংকা রয়েছে, ওখানেই প্রশাসনের লোকজন দায়িত্ব পালন করে। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে তা গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয়দের এগিয়ে আসা দরকার।

সারাবাংলা/এএম

ইভটিজিং কক্সাবাজার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর