‘ট্যানারি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হয়তো মন্ত্রণালয় বিব্রত’
১৭ জুলাই ২০২২ ২১:৪২
ঢাকা: মাত্রাতিরিক্ত দূষণের দায়ে সাভার ট্যানারি শিল্প বন্ধ করতে একাধিকবার সংসদীয় কমিটি সুপারিশ করলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত বৈঠকে কিছুটা পিছু হঠে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার সুপারিশ করেছে। এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, আমরা কঠোর অবস্থান থেকে পিছপা হইনি। তবে, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় হয়তো সরকারের আরেকটি মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিব্রতবোধ করছে।
রোববার (১৭ জুলাই) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, জাফর আলম, মো. রেজাউল করিম বাবলু, খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন এবং মো. শাহীন চাকলাদার অংশ নেন।
কমিটির সভাপতি বলেন, ‘সাধারণত মাছসহ জলজ প্রাণীর বসবাসের উপযোগিতার জন্য পানিতে প্রতি লিটারে ২০০ মিলিগ্রাম অক্সিজেন থাকার কথা। কিন্তু ধলেশ্বরী নদীতে তার তুলনায় দুই থেকে আড়াই গুণ কম অক্সিজেন আছে। বিপরীতে জলজ প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিকর মেটাল ক্রোমিয়ামের সহনীয় মাত্রা প্রতিলিটারে দুই মিলিগ্রাম। কিন্তু ওই নদীতে সেটা রয়েছে ৫ থেকে ৭ মিলিগ্রাম। ফলে ধলেশ্বরী নদী এখন মাছসহ জলজ প্রাণীর জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
সাবের হোসেন চৌধুরী জানান, শিল্প মন্ত্রণালয় আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে অক্সিজেনর মাত্রা বাড়ানো ও ক্রোমিয়াম কমিয়ে আনার চেষ্টা করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা বলেছি ব্যর্থ হলে এর জন্য দায়ী ইউনিটগুলোতে চালু রাখতে দেব না। দরকার হলে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
অতীতে কয়েক দফায় ট্যানারি বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়ন হল না কেন? এখন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার কথা বলছেন, তার মানে আপনারা কি সুপারিশ থেকে পিছিয়ে এসেছেন?- এমন প্রশ্নের জবাবে সাবের হোসেন বলেন, ‘আমরা এখনো কঠোর অবস্থানে। তবে আমরা মন্ত্রণালয়ের পজিশন কিছুটা বুঝি- আরেকটা মন্ত্রণালয়কে বলতে হয়তো তারা বিব্রত বোধ করছে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘দুই বছর ধরেই আমরা শিল্প মন্ত্রণালয়কে বলেছি। কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে তার ৫/৬টি সুপারিশ আমরা করেছি। কিন্তু তার একটিও বাস্তবায়ন করেনি। তারা শুধু বলে করছি, করব, আগামীতে করব, এটা হবে না।’
বৈঠকে ইটভাটার মাধ্যমে সৃষ্ট বায়ু দূষণকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি কারাদণ্ডের বিধান কার্যকর এবং সরকারি সকল অবকাঠামো নির্মাণে ২০২৫ সালের মধ্যে শতভাগ ব্লক ইটের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার করণীয় সম্পর্কে মতামত গ্রহণে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে আগামী সভায় আমন্ত্রণের সুপারিশ করা হয়।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম