সারাদেশে গণ অনশনের ডাক ঐক্য পরিষদের
১৬ জুলাই ২০২২ ২০:৪০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: সারাদেশে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা-নির্যাতনের প্রতিবাদে ২২ অক্টোবর দেশব্যাপী গণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। এরপর আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত।
শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেলে নগরীর চেরাগি পাহাড় মোড়ে ঐক্য পরিষদের সমাবেশ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন রানা দাশগুপ্ত। সরকারি দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন দ্রুত বাস্তবায়ন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন, সমতলের আদিবাসীদের জন্যে পৃথক ভূমি কমিশন গঠন, দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণয়নের দাবিতে এ সমাবেশ হয়েছে।
রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘সরকারি দল ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য যেসব নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আমরা এই সমাবেশ থেকে এর দ্রুত বাস্তবায়ন চাই। আগামী ২২ অক্টোবর শনিবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা গণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করছি। এই কর্মসূচি পালিত হবার পর নতুনভাবে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
চট্টগ্রামেও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘নড়াইলের মির্জাপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন বিশ্বাসকে যেভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্নস্থানে যেভাবে সংখ্যালঘু শিক্ষকদের ওপর হামলা-নির্যাতন হচ্ছে, একইভাবে চট্টগ্রামের চন্দনাইশের খানদিঘী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিল্টন কুমার দাশকে নির্যাতন করা হচ্ছে। আমি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি চন্দনাইশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শিবলীকে অনুরোধ করছি- অনতিবিলম্বে প্রধান শিক্ষককে হয়রানি থেকে রক্ষার পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।’
দেড় মাস ধরে নিখোঁজ চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের ছাত্র দুর্জয় বড়ুয়ার সন্ধান চেয়ে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘দুর্জয়ের সন্ধান চেয়ে থানায় জিডি করা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত দুর্জয় বড়ুয়ার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পুলিশের যারা তদন্তের দায়িত্বে আছে তাদের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, অনতিবিলম্বে দুর্জয়কে তার অসহায় মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দিন। না হলে ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা-কাটগড়ে বসবাসরত জেলেরা সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘পতেঙ্গা-কাটগড় এলাকায় জেলেপল্লীর বাসিন্দাদের ওপর নির্বিচারে সন্ত্রাস চলছে। চট্টগ্রাম নগরীর ৪০ ও ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে এই সন্ত্রাসীরা আছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানাচ্ছি। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কমিশনার, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক এবং সিএমপি কমিশনারের কাছে অনুরোধ, জেলেপল্লীর বাসিন্দা মৎস্যজীবী ভাইবোনদের নির্বিঘ্নে বসবাসের ব্যবস্থা করুন।’
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি পরিমল কান্তি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নিতাই প্রসাদ ঘোষের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামল কুমার পালিত, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন, আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান, ড. জীনবোধি ভিক্ষু, ঐক্য পরিষদের নেতা ইন্দুনন্দন দত্ত, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নীলু নাগ ও রুমকি সেনগুপ্তা বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘোরে।
সারাবাংলা/আরডি/এমও
ঐক্য পরিষদ গণ অনশন টপ নিউজ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ