অসদাচরণের অভিযোগে তিন বিচারককে ‘তিরস্কার’ দণ্ড
১৬ জুলাই ২০২২ ১৭:২৭ | আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২২ ১৮:১০
ঢাকা: অসদাচরণের দায়ে তিন বিচারককে ‘তিরস্কার’ দণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিন বিচারক হলেন, জামালপুর জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারক বর্তমানে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) এম আলী আহমেদ, যশোরের সাবেক জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার বর্তমানে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত মো. ওয়াহিদুজ্জামান এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক ডেপুটি রেজিস্ট্রার (যুগ্ম জেলা জজ) বর্তমানে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান।
গত ৬ ও ৭ জুলাই এ তিন বিচারককে দণ্ড দিয়ে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ শাখা থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
গত ৬ জুলাই আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়—আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক ডেপুটি রেজিস্ট্রার (যুগ্ম জেলা জজ) বর্তমানে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত কর্মকর্তা (যুগ্ম জেলা জজ) মো. মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭ এর বিধি ২ (চ) মোতাবেক ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগের দায়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বিভাগীয় মামলা নং ০৩/২০১৯ রুজু করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়— যেহেতু, মো. মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে রুজুকৃত ০৩/২০১৯ নং বিভাগীয় মামলায় ব্যক্তিগত শুনানি শেষে তাকে ওই অভিযোগের দায়ে ‘তিরস্কার’ দণ্ড আরোপের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ যাচনা করা হলে সুপ্রিম কোর্ট সরকারের সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করে; সেহেতু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক ডেপুটি রেজিস্ট্রার (যুগ্ম জেলা জজ) বর্তমানে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত কর্মকর্তা (যুগ্ম জেলা জজ) মো. মাহমুদুল হাসানকে তার বিরুদ্ধে রুজুকৃত ০৩/২০১৯ নং বিভাগীয় মামলায় আনীত অভিযোগের দায়ে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭ এর বিধি ২ (5) মোতাবেক তিরস্কার দত্ত আরোপ করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর পরদিন ৭ জুলাই আইন সচিবের সই করা পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
জামালপুর জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারক বর্তমানে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) এম আলী আহমেদ সম্পর্কে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে— জামালপুর জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বর্তমানে রংপুর জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-৩ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) এম আলী আহমেদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭ এর বিধি ২(৮) মোতাবেক ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ০১/২০২১ নং বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়— যেহেতু, এম আলী আহমেদের বিরুদ্ধে রুজুকৃত ০১/২০২১ নং বিভাগীয় মামলায় ব্যক্তিগত শুনানিঅন্তে তাকে ওই অভিযোগের দায়ে ‘তিরস্কার’ দণ্ড আরোপের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ যাচনা করা হলে সুপ্রিম কোর্ট সরকারের সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করে; সেহেতু, জামালপুর জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বর্তমানে রংপুর জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-৩ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) এম আলী আহমেদকে তার বিরুদ্ধে ০১/২০২১ নং বিভাগীয় মামলায় আনীত অভিযোগের দায়ে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭ এর বিধি ২(চ) মোতাবেক ‘তিরস্কার’ দণ্ড আরোপ করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
অপর বিচারক যশোরের সাবেক জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার বর্তমানে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত মো. ওয়াহিদুজ্জামান সম্পর্কে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে মো. ওয়াহিদুজ্জামান, যশোরের সাবেক জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (বর্তমানে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত ও সাময়িক বরখাস্তকৃত)-এর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ১৯৮৫-এর বিধি ৩(বি) ও ৩(ডি) অনুযায়ী যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘দুর্নীতির অভিযোগে বিভাগীয় মোকদ্দমা নং ০৩/২০১৭ রুজু করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে— মো. ওয়াহিদুজ্জামানকে প্রদত্ত কারণ দর্শানোর পরিপ্রেক্ষিতে তার লিখিত জবাব, ব্যক্তিগত শুনানিকালে গৃহীত বক্তব্য, বিভাগীয় মোকদ্দমার তদন্তকারী কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনায় তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ১৯৮৫-এর বিধি ৩ (বি) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
সেহেতু বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শের আলোকে মো. ওয়াহিদুজ্জামান, যশোরের সাবেক জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (বর্তমানে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত ও সাময়িক বরখাস্তকৃত)-কে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ১৯৮৫ এ বিধি ৪ (২) (এ) অনুযায়ী ‘তিরস্কার’ (censure) দণ্ড প্রদান করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সারাবাংলা/একে