Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শাজাহানপুর হাটে শেষ মুহূর্তে কমেছে গরুর দাম, লোকসানে ব্যাপারিরা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৯ জুলাই ২০২২ ২৩:১৭

ঢাকা: রাজধানীর শাহাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনী কোরববানির পশুর হাটে শেষ সময়ে এসে কমেছে পশুর দাম। এতে ক্রেতারা কিছুটা খুশি হলেও হতাশ হয়ে পড়েছেন ব্যাপারিরা। শেষ সময়ে গরুর দাম আরও বাড়বে এই আশায় যে সব ব্যাপারি গরু বিক্রি না করে ধরে রেখেছিলেন, তাদের একটি বড় অংশ লোকসানের কবলে পড়েছেন।

এই হাটে কোরবানির আগ মুহূর্তে প্রচুর গরু থাকলেও সে তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা কিছুটা কম। চাহিদার তুলনায় গরু বেশি হওয়ায় হাটটিতে পশুর দাম গত দুইদিনের তুলনায় কিছুটা পড়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রতিটি গরুর দাম কমেছে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত। এতে করে অনেক বিক্রেতা লোকসানের কবলে পড়েছেন। হতাশ হয়েছেন অনেক বিক্রেতা। কেউবা আবার মধ্যরাতের অপেক্ষায় রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে রাত শাহজাহানপুর কোরবানির হাটে গরুর দাম কমতে শুরু করে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা অব্যাহত থাকে। সর্বশেষ রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত বাজারে অবস্থান করে দেখা গেছে গরু ব্যাপারিদের মাঝে হতাশার পরিমাণ বাড়ছে। তারপরেও অনেক বিক্রেতা আগামীকাল রোববার ভোর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইছেন।

শাহাজাহানপুর পশুর হাটে সিরাজগঞ্জ থেকে আসা শাহীন আলাম (২৫) রাতে সারাবাংলাকে বলেন, ‘শনিবার দুপুরে যে গরু ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করিনি, সন্ধ্যায় সেই গরুর দাম পড়ে যাওয়ায় ২ লাখ ১ হাজার বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যায় যে গরু ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দাম করার পরেও বিক্রি করিনি সেই গরুর দা, রাত ৮টার পর এক লাখ টাকার ওপরে কেউ বলছে না।’

একই কথা বলছেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থেকে আসা খসরু তালুকতার (৬০)। তিনি বলেন, ‘টাঙ্গাইল থেকে ২টি ২ লাখ ৪০ হাজার টাকায় কিনে এনে চারদিন থেকে মাত্র ২ লাখ ৪২ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। এতে আমার গরু আনার পরিবহন খরচ, থাকা খাওয়াসহ সব মিলিয়ে আমার ১৪ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ৯টা রাজধানীর শাহাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনী মৈত্রী সংঘের মাঠে বসা কোরবানির গরু হাট সরেজমিনে গিয়ে এই চিত্র পাওয়া গেছে। এ সময় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে বাজারে প্রচুর গরু ছাগলের সমাগম থাকলেও ক্রেতার সংখ্যা সেই তুলনায় কম। ফলে গরুর দাম পড়ে গেছে।

গতকাল শুত্রুবার, আগেরদিন বৃহস্পতিবার যে সব গরু ১ লাখ থেকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে তা কমে ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় নেমে এসেছে। আবার দুইদিন আগে যেসব গরু ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে শনিবার সন্ধ্যার পর তা কমে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকায় নেমে এসেছে। দাম আরও কমে যাবে এই আশায় কোনো কোনো ক্রেতা গরু না কিনে আরও অপেক্ষা করতে যাচ্ছেন। ফলে শেষ মুহূর্তে গরু কিনতে আসা ক্রেতারা মনে মনে খুশি হলেও মন ভারী করে আছেন ব্যাপারিরা।

এদিকে শাহাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনী কোরবানির হাটে ছোট বড় মাঝারি সব আকারের গরু থাকলেও মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা বেশি। বিশেষ করে ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা দামের গরু কিনতে ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। অধিকাংশ ক্রেতার এই দামের মধ্যে কিনতে যাচ্ছেন। ফলে বাজারে ৮০ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দামের গরু সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে দেড় লাখ টাকার ঊর্ধ্বে বিক্রি হবে এমন গরু বিক্রি হচ্ছে হাতে গোনা কয়েকটি।

এদিকে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলা থেকে শাজাহানপুর হাটে ১৬টি গরু বিক্রি করতে এসেছেন মো. ফজল। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত চারদিনে ১০টি গরু বিক্রি করেছি। এতে ৫০ হাজার টাকার মতো লাভ হয়েছে। বাকি ৬টি গরু রয়ে গেছে। কিন্তু এক লাখ টাকায় কেনা যে গরু, সে গরুর দাম ৯০ হাজার টাকার বেশি বলছেন না কোনো ক্রেতা। অথচ একদিন আগেও তা এক লাখ ১০ হাজার টাকা দাম বললেও বিক্রি করিনি।’

একই কথা বলেছেন জামালপুর জেলার ইসলামপুর থেকে ১৭টি গরু বিক্রি করতে আসা মো. কবির সরকার। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘১৭টি গরুর মধ্যে গত তিনদিনে ১১টি গরু বিক্রি করেছে। এতে কিছুটা লাভ হয়েছে। কিন্তু আজ সন্ধ্যার পর ৫টি গরু লোকসানে বিক্রি করেছি। ফলে আগের লাভ শেষ।’

সারাবাংলা/জিএস/একে

কোরবানির হাট টপ নিউজ শাজাহানপুর গরুর হাট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর