Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিএম ডিপোতে পুড়ে বিকৃত ৮ লাশের পরিচয় শনাক্ত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৭ জুলাই ২০২২ ১৮:৩৯ | আপডেট: ৮ জুলাই ২০২২ ০০:০৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনে পুড়ে নিহতদের মধ্যে আটজনের পরিচয় ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আটজনের নামের তালিকা সীতাকুণ্ড থানায় পাঠানোর পর লাশগুলো ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা জমা দেওয়া স্বজনদের কাছে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

ঢাকায় সিআইডি সদর দফতরের ফরেনসিক ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার পর বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) আটটি লাশের পরিচয় নিশ্চিত করে তালিকা পাঠানো হয় সীতাকুণ্ড থানায়। এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে লাশগুলো হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করে পুলিশ, যেসব লাশের অধিকাংশেরই শুধু দেহাবশেষ আছে।

বিজ্ঞাপন

পরিচয় নিশ্চিত হওয়া আটজন হলেন— বিএম ডিপোর আইসিডি সুপারভাইজার মো. সোবহান, ইলেকট্রিশিয়ান মো. রাসেল, গাড়িচালক শাহজাহান, আক্তার হোসেন ও আব্দুল মহি হোসেন, নুসরাত পরিবহনের কাভার্ড ভ্যান চালক আবুল হাশেম এবং শারমিন গ্রুপের কাভার্ড ভ্যান চালক বাবুল মিয়া ও সহকারী মো. সাকিব।

সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক সারাবাংলাকে বলেন, ‘সিআইডির ফরেনসিক ল্যাব থেকে আটটি লাশের পরিচয় নিশ্চিত করে পাঠানো হয়েছে। লাশের দাবিদারদের মধ্যে যারা নমুনা দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে পরিচয় নিশ্চিত হওয়াদের স্বজনদের ডেকে সেগুলো নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) রাতের মধ্যেই আমরা সবগুলো লাশ হস্তান্তর করতে পারব।’

চমেক হাসপাতালের মর্গে থাকা আগুনে পোড়া আরও ১৪ লাশের পরিচয় এখনও শনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশ পরিদর্শক সুমন বণিক।

সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মোট ২৪ টি লাশের দাবিদারদের মধ্য থেকে ৪৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। ১৪টি লাশের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঢাকায় ফরেনসিক ল্যাবে সেগুলোর কাজ চলছে।’

বিজ্ঞাপন

গত ৪ জুন দিবাগত রাতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। এরপর সেখানে কয়েক দফা বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫১ জনের মৃত্যুর খবর প্রশাসন নিশ্চিত করেছে। প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ১০৭ জন। আহত-দগ্ধ অনেকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের অধিকাংশই ডিপো শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, ফায়ার সার্ভিসকর্মী, বিভিন্ন ট্রাক-কভার্ড ভ্যানের চালক, হেলপার এবং পুলিশ সদস্য।

অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের পর যাদের লাশ উদ্ধার করা হয়, তাদের মধ্যে পুড়ে বিকৃত হয়ে যাওয়া ২৪টি লাশের পরিচয় শনাক্তের জন্য ৬ জুন থেকে নমুনা সংগ্রহ শুরু করেছিল সিআইডির ফরেনসিক ল্যাব। মৃতদেহ থেকে ‘ক্রাইম সিন স্যাম্পল’ ও স্বজনদের কাছ থেকে ‘রেফারেন্স স্যাম্পল’ সংগ্রহ করা হয়। রেফারেন্স স্যাম্পলে মৃতদেহের স্বজনের রক্ত, লালা এবং ক্রাইম সিন স্যাম্পলে মৃতদেহের দাঁত, হাড়, চুল, নখ, টিস্যু সংগ্রহ করা হয়েছিল।

এদিকে বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় ৮ জুন ওই ডিপোর আটজনকে আসামি করে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা দায়ের করে পুলিশ। আসামিরা হলেন— বিএম কন্টেইনার ডিপোর ডিজিএম (অপারেশন) নুরুল আকতার, ম্যানেজার (অ্যাডমিন) খালেদুর রহমান, সহকারী অ্যাডমিন অফিসার আব্বাস উল্লাহ, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মো. নাসির উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক (ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো) আবদুল আজিজ, কন্টেইনার ফ্রেইট স্টেশনের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম, একই বিভাগের নজরুল ইসলাম ও জিএম (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) নাজমুল আকতার খান। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারায় ডিপোতে অব্যবস্থাপনা ও গাফিলতির অভিযোগ আনা হয় মামলার এজাহারে।

সারাবাংলা/আরডি/একে

আগুন কনটেইনার টপ নিউজ বিএম ডিপো সীতাকুণ্ড

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর