বগুড়ায় বোরো সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সংশয়
৬ জুলাই ২০২২ ১৪:০৬ | আপডেট: ৬ জুলাই ২০২২ ১৪:০৮
বগুড়া: জেলায় চলতি বোরো ধান সংগ্রহ অভিযানে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। বাজারে ধান ও চালের মুল্য সরকার নির্ধারিত দরের তুলনায় বেশি হওয়ায় সংগ্রহ অভিযানের দুই মাসের বেশি পার হলেও লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও অর্জিত হয়নি। তাই সংশ্লিষ্টরা চাল আমদানি শুরু হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। কারণ, চাল আমদানি শুরু হলে বাজার দর কমতে পারে। আর তা হলেই চুক্তিবদ্ধ মিলাররা চাল সরবরাহ তৎপরতা হবে বলে আশা করছেন তারা।
জেলা খাদ্য বিভাগ জানিয়েছে, চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় ধান সংগ্রহের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ২৫ হাজার ৩৪১ মেট্রিক টন। আর চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৬৪ হাজার ৬৪ মেট্রিক টন। ২৮ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া ধান সংগ্রহ চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। আর চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয় গত ৭ মে। চুক্তিবদ্ধ মিলারদের মাধ্যমে এই সংগ্রহ অভিযান চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। ধান সরাসরি কৃষকদের নিকট থেকে সংগ্রহ করা হয়। এ পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে ৩ হাজার ৯৫০ মোট্রক টন। এটি জেলা থেকে সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১৬ ভাগ। আর চুক্তিবদ্ধ মিলারদের মাধ্যমে চাল সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ২৮ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। এটি জেলার সরকারি চাল সংগ্রহে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৪৫ ভাগ।
খাদ্য বিভাগের একাধিক সূত্র জানায়, সরকারি ধান চাল সংগ্রহ অভিযানের ক্ষেত্রে এবার পরিস্থিতি অনেকটা নাজুক। গত বছরের এই সময়ে সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার অবস্থা এতটা খারাপ ছিল না। এবার বাজারে ধান চালের মুল্য শুরু থেকেই ভালো অবস্থায়। ধানের সংগ্রহ মুল্যে প্রতিমণ ১ হাজার ৮০ টাকা হলেও বর্তমানে ১ হাজার ১০০ টাকার নিচে বাজারে ধান নেই। চালের মুল্য রয়েছে ৪০ টাকা কেজি। সেখানে মোটা চালেরও বাজার মুল্য অনেক বেশি। তাই লোকসানের কারণে চাল সংগ্রহ অভিযানে চুক্তিবদ্ধ মিলাররা তৎপর হচ্ছেন না।
সুত্র জানায়, এবার জেলার অনেক উপজেলায় কৃষকদের নিকট থেকে ধান পাওয়া যায়নি বললেই চলে। সংগ্রহ অভিযানের চেয়ে বাইরের বাজার মুল্য বেশি থাকায় কৃষকরা সরকারি সংগ্রহ অভিযানে ধান দিতে আগ্রহী ছিলেন না।
খাদ্য বিভাগ সংশ্লিষ্টরা জানান, ধানের সংগ্রহ অভিযানের সময় থাকলেও সংগ্রহের পরিমাণ আর বাড়ার সম্ভবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। তবে আমদানি করা চাল প্রবেশ করলে চালের বাজার কমতে পারে। এতে চুক্তিবদ্ধ মিলাররা লোকসান হলেও চাল সরবরাহ করবে। আর চালের সংগ্রহ মাত্রা অনেকটাই পূরণ হবে। বগুড়ায় খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ মিলারের সংখ্যা ১ হাজার ১৩১ জন। তবে সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৮ ভাগ চালের কোনো চুক্তিই হয়নি।
বগুড়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক দুদু জানান, বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী মিলারদের প্রতি কেজি চালে অন্তত ২ থেকে ৩ টাকা লোকসান হচ্ছে। তবে চুক্তির কারণে তারা চাল সরবরাহ করছেন। এজন্য সরকারি প্রণোদনার দাবি করেন তিনি।
এদিকে বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আশ্রাফুজ্জামান জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চুক্তিবদ্ধ মিলাররা সংগ্রহ অভিযান সফল করবেন আশা করেন তিনি। তবে ধানের ক্ষেত্রে এটা হবে না।
আর আমদানি করা চাল প্রবেশ করতে শুরু করলে বাজারে এর প্রভাব পড়তে পারে বলেও উল্লেখ করেন আমিনুল হক দুদু।
সারাবাংলা/এনএস