Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আফগানিস্তানের আফিম ঢাকায়, গ্রেফতার ২

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২ জুলাই ২০২২ ১৮:০৪ | আপডেট: ২ জুলাই ২০২২ ২১:২১

আবুল মোতালেব ও জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ভূঁইয়া, ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: ঘোষণা ছিল ওষুধের কাঁচামাল আসবে ঢাকায়। গোয়েন্দাদের সন্দেহ হয় এটি মাদকের চালান হতে পারে। এ কারণে নজরদারি শুরু করেন গোয়েন্দারা। ফলে উদ্ধার করা হয় ওষুধের কাঁচামালের সেই চালানটি। সন্দেহ থেকেই চালানটি রাসায়নিক পরীক্ষা চালায় গোয়েন্দারা। পরে দেখা যায়, আসলে ‍চালানটি ওষুধের ছিল না। পুরো চালানটিই ছিল আফিমের। ৩ কেজি আফিম। পরে রাজধানীর পল্টন ও বনশ্রী থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক জাফরুল্লাহ কাজল সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। গ্রেফতাররা হলেন- নোয়াখালীর আবুল মোতালেব ও জামালপুরের জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ভূঁইয়া।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, মোতালেব (৪৬) দীর্ঘদিন যাবৎ জনশক্তি ব্যবসার আড়ালে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আর মো. জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ভূঁইয়া (88) দীর্ঘদিন যাবৎ একটি বেসরকারি একটি কোম্পানির প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সুযোগে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।

আফিম জব্দের সময় দেখা যায়, একটি শপিং ব্যাগের ভেতরে একটি প্লাস্টিকের বয়ামের মধ্যে পলিথিনে মোড়ানো ২ কেজি আফিম এবং অন্য একটি পলিথিনে মোড়ানো এক কেজি আফিম রয়েছে। আফিম একটি ‘ক’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য। জব্দ হওয়া আফিমের আনুমানিক দাম পৌনে ৩ কোটি টাকা।

গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, জব্দ হওয়া আফিমের চালানটি ফেনী থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। আসামিরা এসব মাদকদ্রব্য বাজারজাত করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং এই চক্রের সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তির তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে চক্রের সকল সদস্যকেই তদন্তপূর্বক আইনের আওতায় আনা হবে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পরিচালক জাফরুল্লাহ কাজল।

আফিমের এ চালান কোনো রুটে ও কিভাবে কারা নিয়ে আসছে— জানতে চাইলে জাফরুল্লাহ কাজল বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে এ চালান বাংলাদেশে এসেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাদকের হাব হচ্ছে আফগানিস্তান। আফগানিস্তান থেকেই এ আফিমের সরবরাহ। আফিমের চালান ঢাকায় আনা হয় ওষুধের কাঁচামাল হিসেবে। উদ্ধারকৃত আফিমের চালানটি ফেনী থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। গ্রেফতারকৃতরা আফিম নতুন করে ঢাকায় সরবরাহের চেষ্টা করে আসছিল।

বিজ্ঞাপন

আফগানিস্তানে এখন তালেবান ক্ষমতায়। ২০২০ সাল থেকে নতুন করে আফগানিস্তানে চাষ হচ্ছে আফিম। এর সঙ্গে তালেবানদের কারও যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেশে আফিমের ব্যবহার দু’ভাবে হয়ে থাকে। এক আফিম সরাসরি সেবন এবং দুই আফিম দিয়ে কেমিক্যালের সাহায্যে হেরোইন, ইয়াবা ও ফেনসিডিলের মতো ভয়ংকর মাদক তৈরি। আফগানিস্তান ছাড়াও পাকিস্তান ও ইরানে এর চাষাবাদ হয়ে থাকে।

আফিম গ্রহণের ক্ষতিকর অনেক দিক রয়েছে। এটি গ্রহণে শ্বাসকষ্ট হতে পারে, গ্রহণকারী অবচেতন হয়ে পড়তে পারেন। মুখ ও নাক শুকিয়ে যাওয়া, বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদির পাশাপাশি বেশি পরিমাণে ব্যবহারে মৃত্যুও ঘটতে পারে।

সারাবাংলা/ইউজে/এনএস

আফিম আফিমসহ গ্রেফতার ২ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর