৯ বছরের শিক্ষার্থী বলাৎকার: সাউথ পয়েন্টের শিক্ষক রিমান্ডে
২৮ জুন ২০২২ ১৭:১১ | আপডেট: ২৮ জুন ২০২২ ১৭:১৫
ঢাকা: রাজধানীর রামপুরায় ৯ বছর বয়সী তৃতীয় শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক রোকনুজ্জামান খানের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালত এই রিমান্ডের আদেশ দেন।
এদিন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা রামপুরা থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) তওফিকা ইয়াসমিন আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
মামলার আবেদনে বলা হয়, আসামি পেশায় একজন শিক্ষক হলেও সে একজন দুশ্চরিত্রের লোক। সে বিবাহিত এবং তার পরিবার গ্রামে থাকে। আসামি ঢাকায় মেসে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে সে স্কুলের বিভিন্ন ছাত্রদের সঙ্গে যৌনতামূলক আচরণ করত। ভিকটিমকে ভয় দেখিয়ে সে বলাৎকার করে। এছাড়া স্কুলের অন্যান্য ছাত্রদের সঙ্গেও বলাৎকারের ঘটনা ঘটিয়েছে মর্মে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এদিকে আসামির পক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজুর রহমান মন্টু রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। বাদীপক্ষে ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি গাজী শাহ আলম রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার বাদী ওই শিশুর বাবার অভিযোগে বলা হয়, ভিকটিম সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মালিবাগ শাখার ৩য় শ্রেণিতে বাংলা মিডিয়ামে পড়ালেখা করে এবং উপরোক্ত আসামি এই স্কুলের শিক্ষক। আমার ছেলেকে মিতা নামে এক প্রাইভেট শিক্ষক পড়াতো। তিনি আমার ছেলেকে পড়ানো বাদ দিয়ে চলে গেলে আমি আমার ছেলের জন্য একজন প্রাইভেট শিক্ষক খুঁজতে থাকি। পরবর্তীতে মামলার আসামি আমার বাসায় আসেন ছেলের প্রাইভেট শিক্ষক হিসেবে। আমার ছেলে যে স্কুলে পড়ে, তিনি সেই স্কুলের শিক্ষক। এতে করে আমি ও আমার স্ত্রী খুবই খুশি হযই। আসামি আমাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে বাসা থেকে চলে যায়। তখন আমার ছেলে কান্না করতে করতে বলে যে, আম্মু আমি এই শিক্ষককের কাছে পড়ব না। এই শিক্ষক ভাল না, উনি পচা এই বলেই আমার ছেলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। আমার ছেলের জ্ঞান ফিরলে তার কাছে জানতে পারি যে, ওই শিক্ষক কাছে পেলেই আমার ছেলের গাল ধরে টানে, পেটে হাত দেয়, নাভির ভিতরে আঙ্গুল দেয় এবং আমার ছেলের লিঙ্গতে হাত দিয়ে টানাটানি করে। আসামি টিফিনের ফাঁকে অনেক অত্যাচার করে যা আমার ছেলেকে সহ্য করতে হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, ভিকটিমের মা ছেলেকে বলে যে, দুইদিন আগে তুমি স্কুল থেকে এসে টয়লেটে যাওয়ার পর তোমার মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়ছিলো কেন। তখন ভিকটিম বলে ওই শিক্ষক সুযোগ পেলেই ঐ স্কুলের টয়লেট ও ফাঁকা কোনো রুম পেলেই আমার ছেলের প্যান্ট খুলে সে খারাপ কাজ করত। উপরোক্ত বিবাদী আমার ছেলেকে বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখিয়ে বলে এই সকল ঘটনা যদি কাউকে কিছু বলে তাহলে সে আমার ছেলেকে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দিবে এবং স্কুল থেকে বের করে দিবে ও জানে মেরে ফেলবে। তাই আমার ছেলে বিবাদীর ভয় দেখানোর কারণে সে ভয় পেয়ে এতদিন কাউকে কিছু বলে নাই।
সারাবাংলা/এআই/এসএসএ