কুতুবপুর থেকে পায়ে হেঁটে পদ্মা সেতুতে
২৬ জুন ২০২২ ২০:৫৮ | আপডেট: ২৭ জুন ২০২২ ০০:২০
পদ্মা সেতু এলাকা থেকে ফিরে: মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কুতুবপুর সাহেব বাজার থেকে পদ্মা সেতুতে ঘুরতে এসেছেন তিন চাচা-ভাতিজার ছোট একটি দল। ভ্যানচালক নাসির, তার চাচা অটোগাড়ির চালক মোহাম্মদ আবুল মিয়া এবং নাসিরের বড় ভাই আব্দুল জলিল মাতবর, যিনি পেশায় একজন কৃষিজীবী। পদ্মার জাজিরা প্রান্তের এই তিন চাচা-ভাতিজা পায়ে হেঁটে পদ্মা সেতু এলাকায় ঘুরতে এসেছেন।
এমন আরও অনেক দর্শনার্থীদের সঙ্গে সেতুর পাশ ঘেঁষে পায়ে হেঁটে জাজিরা প্রান্ত থেকে কয়েক কিলোমিটার গিয়ে ফিরছিলেন তারা। সারাবাংলার সঙ্গে কথোপকথনে তারা জানালেন সেতু ঘিরে তাদের স্বপ্ন, উচ্ছ্বাস আর আনন্দের কথা।
শিবচর উপজেলার কুতুবপুর থেকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিজের চোখে দেখতে, একটু ছুঁয়ে দেখতে এসেছেন তারা। আজ প্রথম দিন পদ্মা সেতুতে হাঁটা ও নেমে ছবি তোলার ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় থাকায় সেই সুযোগে তারা সেতুতে উঠেছিলেন। জানালেন, পুলিশ কয়েকবার নেমে যেতে বলেছে। তাই তারা ফিরে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন-
- ‘শেখের বেটি আবারও ক্ষমতায় আসুক’
- ৮ ঘণ্টায় পদ্মা সেতুর আয় ৮২ লাখ টাকা
- লেন না মানায় পদ্মা সেতুতে টোল আদায়ে দেরি
- পদ্মা সেতুর নাট খোলা তরুণ সিআইডির হাতে আটক
- ৬ ঘণ্টায় পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়েছে ৮ হাজার ৯১০ গাড়ি
- ৫টা ৪৫ মিনিটে টোল দিয়ে পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু
- পদ্মা সেতুতে টিকটক, হাঁটা চলা, ছবি তুললে সোমবার থেকে জরিমানা
পদ্মা সেতু হওয়ায় এলাকায় কী কী পরিবর্তন ঘটছে বা ঘটার সম্ভাবনা দেখছেন— জানতে চাইলে নাসির সারাবাংলাকে বলেন, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে যোগাযোগ ভালো হওয়ায় এলাকায় অনেক উন্নতি হবে। অনেক মিল-ফ্যাক্টরি হবে। অনেক মানুষের চাকরি হবে।
নাসির জানালেন, বর্তমানে একটি আধুনিক তাঁতপল্লি গড়ে তোলা হচ্ছে তাদের এলাকায়। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়ায় তাদের এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যও গতি পাবে বলে আশা করছেন তিনি। তার সঙ্গের স্বজনরাও জানালেন, এরই মধ্যে শিবচর এলাকার জমির দাম বেড়ে গেছে।
ব্যবসা, কেনাকাটা আর চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে নিয়মিতই ঢাকা আসতে হয় নাসির, আবুল মিয়া ও জলিল মাতবরকে। বললেন, আগে লঞ্চ, স্পিডবোট, ফেরিতে অনিশ্চয়তা আর অনিরাপদভাবে পদ্মা পাড়ি দিতে হতো তাদের। এখন বর্তমানে সেতুপথে খুব দ্রুত আর নিরাপদে পদ্মা পার হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবেন তারা।
তারা তিন জনই বললেন, সেতু হওয়ার কারণে বাস ভাড়া বেড়ে যাওয়াসহ জিনিসপত্রের দামও কিছুটা বেড়ে গেছে। কিন্তু তারা সেটিতে আপত্তি জানাচ্ছেন না। কারণ এখন যোগাযোগ অনেকটাই সহজ ও দ্রুত হয়ে গেছে। এর ফলে তাদের এলাকার যে অর্থনৈতিক উন্নতির সম্ভাবনা, সেটি নিয়েই তারা সন্তুষ্ট।
এদিকে, পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজার কর্মকর্তারাও জানালেন, মানুষের আবেগ জড়িত থাকায় পদ্মা সেতুতে আজ প্রচুর ভিড়। অনেকেই শুধুমাত্র দর্শনার্থী হিসেবে দূর-দূরান্ত থেকে সেতুতে এসেছেন। তারা নিজেদের মতো করে ঘুরছেন। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে স্বপ্নপূরণের আনন্দ হচ্ছে বলেও জানালেন তারা।
সারাবাংলা/আরএফ/টিআর