সুনামগঞ্জে নৌযান দেখলেই ত্রাণের আশায় ছুটছে বানভাসি মানুষ
২৪ জুন ২০২২ ০৯:৫৬ | আপডেট: ২৪ জুন ২০২২ ১১:৩৬
সুনামগঞ্জ: নৌযান দেখলেই ত্রাণের আশায় ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে আসছেন বানভাসি মানুষ। সাঁতার কেটে, গলাসমান পানিতে নেমেও নৌযানের কাছাকাছি আসছেন তারা। তবে বেশিরভাগই ফিরছেন শূন্য হাতে। প্রতিযাগিতায় না পারা বৃদ্ধ ও শিশুরা ভীষণ বেদনা নিয়েই ফিরছেন। সুনামগঞ্জ জেলার বেশিরভাগ এলাকাজুড়েই এই অবস্থা।
প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ১৬ জুন সুনামগঞ্জের বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়। পরদিন শুক্রবার ভোর থেকে ৩টার মধ্যেই ডুবে যায় জেলার ৮০ ভাগেরও বেশি এলাকা। সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার ও ছাতকের বেশিরভাগ বাড়িঘরের চালা পর্যন্ত উঠে পড়ে বানে জল। তালা দেওয়া অনেক দুইতলা গুরুত্বপূর্ণ অফিস ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবনের তালা ভেঙে জীবন বাঁচিয়েছেন লাখো মানুষ। ভয়াবহ বন্যার তাণ্ডবে ঘরে থাকা ধান-চাল, জমিতে থাকা সবজি, পুকুরের মাছ সবই ভেসে গেছে। বর্তমানে বন্যার পানি কিছুটা কমলেও ঘরে খাবার নেই, বাইরে কাজ নেই। বেশিরভাগ দোকানপাঠও এখনো খুলতে পারেননি দোকানিরা। এই অবস্থায় খাদ্য সংকট জেলার বেশিরভাগ এলাকায়। মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত সকলেই মহাবিপদ পড়েছেন। নদীতে হাওরে নৌযান দেখলেই ত্রাণের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে আসছেন নারী, পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধরা। ত্রাণ পাওয়ার আকুতি সকলের কণ্ঠ।
বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জ লঞ্চঘাট থেকে প্রায় ৩০০ প্যাকেট ত্রাণ নিয়ে কোস্টগার্ডের একটি দল সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারংয়ের দিকে রওনা দিলে পথেই ইব্রাহিমপুর, সদরগড় ও অক্ষয়নগরের হাজারো বানভাসি মানুষ ঝুঁকি নিয়ে তাদের নৌযানের দিক আসতে থাকে। ত্রাণবাহী নৌযান অক্ষয়নগর, পূর্ব-পশ্চিম সদরগড় ও ইব্রাহিমপুর ভেড়ানার চেষ্টা করলেও বানভাসি মানুষের ভিড় দেখে নৌযান ভেড়াতে পারেননি কাস্টগার্ডের সদস্যরা। পরে নৌযান থেকেই ত্রাণের বস্তা ছুঁড়েছেন তারা।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বন্যাদুর্গত এলাকায় আমরা ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। সুনামগঞ্জের এই বিপদে লাখো মানুষকে বাঁচাতে সরকারের পাশপাশি সারাদেশের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান স্থানীয়রা।
এদিকে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বৃহস্পতিবার সকালে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে এখন বন্যার পানিতে প্লাবিত আছে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা। এমনকি জেলা সদরের সঙ্গে এখন যোগাযোগ সচল হয়নি ১২টি উপজেলার।
সারাবাংলা/এএম