জাহাজভাঙা শিল্পের পিতল পাচার রোধে ব্যবস্থা নিতে নোটিশ
২১ জুন ২০২২ ১৬:৩৩
ঢাকা: জাহাজভাঙা শিল্পের পিতল পাচার প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিটি জাহাজ থেকে প্রাপ্ত পিতলের পরিমাণ নিবন্ধন, জাহাজভাঙা শিল্প-কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, জাহাজভাঙা শিল্প কারখানায় ১৮ বছরের নিচে কাউকে নিয়োগ না দেওয়া এবং শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ জুন) মানবাধিকার সংগঠন ‘ল অ্যান্ড লাইভ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট’র পক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর ডাকযোগে এই নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। বাণিজ্য সচিব, বাংলাদেশ ট্রেড এবং ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান, এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের কাছে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পিতলের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। পিতল দিয়ে তৈরি হচ্ছে দামি আসবাব, বাথরুম ফিটিংস তথা দৈনন্দিন ব্যবহার্য অনেক সামগ্রী। পিতলের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার শিল্প প্রতিষ্ঠান। এসব পিতলের একটি বড় অংশের যোগান আসে আন্তর্জাতিক দরপত্রে ক্রয়কৃত বিভিন্ন জাহাজ থেকে। এই জাহাজ যখন শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে ভাঙা হয় তখন সেখান থেকে পিতল সংগ্রহ হয়ে থাকে। বাকিটা সংগৃহীত হয় স্থানীয়ভাবে।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পিতলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় এসব পিতল পাচার হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের পিতলনির্ভর কারখানাগুলোকে বেশিদামে ভারত এবং অন্যদেশ থেকে পিতল আমদানি করতে হয়। ফলে আমাদের দেশে পিতল সামগ্রির মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। একইসঙ্গে পিতলনির্ভর শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধের উপক্রম হচ্ছে। যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলছে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী পিতল পাচারের একটি সিন্ডিকেট নিজেরা লাভবান হয়ে এগুলো পাচার করে দেশের ক্ষতি করছে, যা বেআইনি এবং কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বাংলাদেশের জাতীয় শিল্পনীতি-২০২২ অনুযায়ী দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশ করার কথা বলা হয়েছে। কাজেই দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশে অবশ্যই জনস্বার্থ রক্ষায় পিতল পাচার বন্ধ করতে হবে।
এছাড়া শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড গুলোতে শিশু শ্রমিক নিয়োগ করা হয়, যা আইনসঙ্গত নয়। জাহাজ ভাঙা শিল্প কারখানায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার অপ্রতুলতা এবং নিরাপত্তা সামগ্রীর অভাবে প্রতিবছর বহুসংখ্যক শ্রমিক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে হতাহত হন। যার তেমন কোনো প্রতিকার নেই।
নোটিশপ্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে নোটিশ প্রেরণকারীকে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নোটিশে জানানো হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম