বন্যার বিপদকে পুঁজি করছে সিলেটের ব্যবসায়ীরা, খাদ্য সংকট চরমে
১৮ জুন ২০২২ ১৯:০৯ | আপডেট: ১৮ জুন ২০২২ ১৯:৫৬
বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়েছে সিলেটবাসী। প্রতি ঘণ্টায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় জেলার উঁচু এলাকাগুলোও এখন প্লাবিত। অন্যদিকে মানুষজনের দুর্ভোগকে পুঁজি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বিদ্যুৎ নেই, এই অবস্থায় সবচেয়ে প্রয়োজনীয় মোমবাতি পাওয়া যাচ্ছে না। দুয়েক জায়গায় মোমবাতি পাওয়া গেলেও তার দাম সাধারণের নাগালের বাইরে।
স্থানীয়রা জানান, টানা বৃষ্টি ও জমে থাকা পানির কারণে ঘর থেকে বের হওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ায় ত্রাণ কার্যক্রমও খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। অনেকের ঘরে চাল-সবজি থাকলেও সেগুলো রান্না করে খাওয়ার মতো ব্যবস্থা নেই। বেশিরভাগ ঘরবাড়িতে পানিতে কারণে আগুন জ্বালানের ন্যূনতম সুযোগও নেই।
সিলেট উপশহরের বাসিন্দা নিতেশ সরকার সারাবাংলাকে বলেন, আগের কিছু চাল ছিল, আর সামান্য কিছু বাজার করতে পেরেছি। দোকানপাট সব বন্ধ। পানিতে রাস্তা ডুবে যাওয়ায় চলাচলেও সমস্যা হচ্ছে।
সিলেট থেকে ম্যাক সুমন জানান, এখন পর্যন্ত অনবরত বৃষ্টি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। মানুষের দুর্দশার শেষ নাই।
সিলেটের সারাবাংলা করেসপন্ডেন্ট জানান, শনিবার সকাল ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, ছোট যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। রিকশা ও বড় যানবাহন পানি ডিঙিয়েই চলছে। নগরীর সুবিদবাজার রোডসহ একাধিক মূল সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। চারদিকে থৈ থৈ পানি। রাস্তা, দোকানপাট, বাসাবাড়ি, ঘরের মধ্যে পানি। কোথাও কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর পর্যন্ত।
সিলেট নগরীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত উপশহর পুরো বিপর্যস্ত। উপশহর যেন আলাদা দ্বীপ। পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রবল বর্ষণ অব্যাহত থাকায় রাস্তায় মানুষজনই যাচ্ছে না।
এদিকে চালিবন্দর, মিরাবাজার, আগপাড়া, শাহীঈদগাহ, টিবি গেট, কাজলশাহসহ ২০-৩০টি এলাকায় নতুন করে পানি প্রবেশে করছে। সবমিলিয়ে শতাধিক মহল্লার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছে।
বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ায় উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার জন্য সেনাবাহিনী কাজ শুরু করেছে। শুক্রবার দুপুর থেকে তারা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নৌবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন সিলেট জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।
সারাবাংলা/এসএসএ/এএম