পুলিশের ওপর হামলা: আইনজীবীর রিমান্ড আদেশে আইনজীবীদের বিক্ষোভ
৮ জুন ২০২২ ১৯:১৫ | আপডেট: ৮ জুন ২০২২ ১৯:৩০
ঢাকা: রাজধানীর জুরাইনে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আদালত এক আসামির জামিন ও পাঁচ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন। মামলাটিকে মিথ্যা মামলা বলে অভিহিত করছেন নিম্ন আদালতের আইনজীবীরা। পাশাপাশি রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আসামিদের মধ্যে একজন আইনজীবী থাকায় তার জামিনের দাবিতে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের সামনে বিক্ষোভ করছেন তারা।
বুধবার (৮ জুন) বিকেলে আদালতে এই মামলার আসামিদের উপস্থিত করা হয়েছিল। আসামিদের মধ্যে ইয়াসিন জাহান নিশান পেশায় আইনজীবী। তিনি জামিন পেয়েছেন আদালতে। বাকি পাঁচ আসামি নিশানের স্বামী দেওয়া সোহাগ উল ইসলাম রনি ও ভাই ইয়াসিন আরাফাত ভুঁইয়া এবং শরিফ, নাহিদ ও রাসেলকে রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।
আইনজীবীরা বলছেন, রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আসামিদের মধ্যে ইয়াসিন আরাফাত ভুঁইয়াও একজন আইনজীবী। অন্যদিকে সোহাগ উল ইসলাম রনি একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবী। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। এই মামলায় আসামিরা জামিন পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু তাদের জামিন দেওয়া হয়নি বলেই তারা বিক্ষোভ করছেন।
আরও পড়ুন-
- জুরাইনে ট্রাফিক বক্সে হামলা, ৩ পুলিশ আহত
- জুরাইনে ৩ পুলিশকে মারধর: ৪৫০ জনের নামে মামলা
- পুলিশের ওপর হামলা: নারী আইনজীবীর জামিন, ৫ জন রিমান্ডে
- ‘উল্টো পথের মোটরসাইকেল থামানোর কারণেই সার্জেন্টকে মারধর’
- পুলিশের ওপর হামলা, শ্যালক-দুলাভাইসহ ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন
আইনজীবী ঢাকাইয়া মৌসুমি বলেন, নারী আইনজীবী ইয়াসিন জাহান নিশান অন্তঃসত্ত্বা থাকায় আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন। অথচ আরও দুই আইনজীবীকে (একজন সনদধারী, একজন শিক্ষানবিশ) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। আদালত মামলা জামিন দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিতে পারতেন। এর পরিবর্তে জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। আদালতে একতরফা আদেশ হয়েছে। আমরা ওই দুই আইনজীবীর মুক্তি চাই। মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালত প্রঙ্গণ ছেড়ে যাবেন না বলেও জানান তিনি।
নিম্ন আদালতের আরেক আইনজীবী আছাদ বলেন, আদালত আজ আসামিদের জামিন দিতে পারতেন। এটা তো আর মাদক, ধর্ষণ, হত্যার মামলা না। একটি সাজানো মিথ্যা মামলা। আমরা যেকোনো শর্তে আমাদের সহকর্মীদের জামিন চাই। আজ ইয়াসিনের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটেছে, কাল আমার সঙ্গেও যে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না— তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
এর আগে, বিকেলে এই মামলার পাঁচ আসামিকে আদালতে উপস্থিত করা হলে তখনো আদালতের সামনে বিক্ষোভ করেন আইনজীবীরা। তারা গ্রেফতার আইনজীবীদের জামিনের পক্ষে স্লোগান দেন। একইসঙ্গে মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানান।
এর আগে, মঙ্গলবার সকালে জুরাইন রেলগেট এলাকায় এক ট্রাফিক সার্জেন্টকে বেধড়ক মারধরের ঘটনা ঘটে। এসময় আরও দুই পুলিশ সদস্য সেখানে উপস্থিত হলে তাদেরও মারধর করা হয়। এর মধ্যে সার্জেন্টকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সোহাগ উল ইসলাম রনি তার স্ত্রী ইয়াসিন জাহান নিশানকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, তাদের অভিযোগ— ট্রাফিক সার্জেন্ট তাদের হয়রানি করেছেন। তবে পুলিশের দাবি, উল্টো রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় সার্জেন্ট তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকান এবং কাগজপত্র দেখতে চান। কাগজপত্র না দেখাতে পেরেও রনি ও নিশান ওই সার্জেন্টের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে তারা উপস্থিত স্থানীয়দের নিয়ে পুলিশ সদস্যদের মারধর করেন এবং পুলিশ বক্স ভাঙচুর করেন।
সারাবাংলা/এআই/টিআর
আইনজীবীর রিমান্ড জামিন নামঞ্জুর টপ নিউজ পুলিশকে মারধর পুলিশের ওপর হামলা