এবার ছাত্রলীগ নেতা রনির বিরুদ্ধে কোচিং মালিককে পেটানোর অভিযোগ
১৯ এপ্রিল ২০১৮ ১৭:২৯ | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ২১:২০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
চট্টগ্রাম: মহানগরীতে এক অধ্যক্ষকে মারধর নিয়ে সমালোচনার রেশ না কাটতেই এবার এক কোচিং সেন্টারের মালিককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির বিরুদ্ধে।
https://youtu.be/zrD6iWmOt8U?t=3
বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) এই ঘটনায় বাদী হয়ে মোহাম্মদ রাশেদ নামের ওই ভুক্তভোগী নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এতে রনি ও তার বন্ধু নোমানকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, এক কোচিং শিক্ষককে মারধোরের বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের সঙ্গে প্রমাণ হিসেবে কিছু ছবি এবং একটি ভিডিও ফুটেজ আমরা পেয়েছি। যাচাই-বাছাই করে অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে।
২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ভুক্তভোগীকে মারধোর করা হয় উল্লেখ করে ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৩ এপ্রিল ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনি (২৯) ও তার বন্ধু নোমান চৌধুরী রাকিব (২৪)সহ আরও কয়েকজন ব্যক্তি ভুক্তভোগী রাশেদকে ধরে নিয়ে তাদের মুরাদপুর পাঁচলাইশ বুড়িপুকুর পাড় অফিসে নিয়ে যায়। এসময় তার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। এত টাকা তার কাছে নেই জানানো হলে এ সময় রনি তার অফিসে থাকা হকিস্টিক দিয়ে রাশেদের বাম কানের উপরে আঘাত করে। এতে রাশেদের বাম কানের শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়ে যায় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে বাদী রাশেদ মিয়া সারাবাংলাকে বলেন,‘আমার সঙ্গে রনির ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু গত ৭-৮ মাস ধরে আমার অফিসকে সে নিজের অফিসের মতো ব্যবহার শুরু করে। আমার অফিসে বসে রনি বিভিন্নজনের কাছে টাকা দাবি করত। লোকজনকে ডেকে আমার অফিসে এনে মারধর করত। তার যন্ত্রণায় আমি অফিসে তালা মেরে দিয়েছিলাম। পরে আবার সেটি খুলি। এরপর সে আমার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রনি আমার অফিসে ঢুকে আমাকে মারধর করে।
এ দিকে চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করলেও মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেছেন রনি। তিনি এ বিষয়ে সারাবাংলাকে বলেন, ‘রাশেদ মিয়া আমার পার্টনার। কোচিং সেন্টারে আমার শেয়ার আছে। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি ব্যবসায়িক হিসাব দিচ্ছিলেন না। আমার কাছ থেকে সাড়ে ৯ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ফেরত দিচ্ছিলেন না। এসব বিষয়ে তার সঙ্গে আমার দূরত্ব হয়।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২০মার্চ এই রাশেদ মিয়া চকবাজার থানার তৎকালীন ওসি আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে ৭০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির একটি মামলা করেন। ওই সময় পুলিশের হয়রানির বিরুদ্ধে রাশেদ মিয়ার পাশে দাঁড়ান ছাত্রনেতা রনি। কিন্তু এর প্রায় এক বছর পর ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ রাশেদের কোচিং সেন্টারে ঢুকে তাকে বেদম মারধর করেন রনি।
এছাড়াও গত ৩১মার্চ চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ ড. জাহেদ চৌধুরীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার ঘটনার সমালোচিত হন রনি। ওই ঘটনায় নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনিসহ ৭ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ ড.জাহেদ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় একটি মামলাও দায়ের করেন। অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগে তাকে অধ্যক্ষকে কিল-ঘুষি মারার ঘটনাটি কলেজ থাকা সিসি টিভির ফুটেজটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠে।
এছাড়া ২০১৬ সালের ৭ মে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া বোর্ড স্কুল কেন্দ্রের বাইরে থেকে ভোটের সিলসহ রনিকে আটকের পর তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেয়া হয়। রনিকে আটকের সময় তার কাছে একটি নাইন এমএম পিস্তল ও ১৫ রাউন্ড গুলি পাওয়া যায়। ওই সময় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অপরাধে ইউপি ভোটে দায়িত্বরত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হারুন অর রশিদ ছাত্রলীগ নেতা রনিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন।
সারাবাংলা/এনআর/জেডেএফ
** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook