‘তৃণমূল বাদ দিয়ে কখনো দেশের উন্নয়ন হতে পারে না’
২৯ মে ২০২২ ১৭:৪৬ | আপডেট: ২৯ মে ২০২২ ২১:১২
ঢাকা: পল্লী উন্নয়ন অর্থাৎ গ্রামের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করতে পারলে দেশের উন্নয়ন হয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, একেবারে তৃণমূল বাদ দিয়ে কখনো দেশের উন্নয়ন হতে পারে না।
রোববার (২৯ মে) গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। এ দিন পল্লী উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনাকে ‘আজিজুল হক পল্লী উন্নয়ন পদক-২০২১’-এ পদক তুলে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ পদকে ভূষিত করে ‘সেন্টার অন ইন্ট্রিগ্রেটেড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ (সিরডাপ)।
সিরডাপের মহাপরিচালক ডা. চেরদসাক ভিরাপা প্রধানমন্ত্রীর হাতে পুরস্কারটি তুলে দেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ও প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কারটি দেশের জনগণকে উৎসর্গ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “সিরডাপ আমাকে ‘আজিজুল হক পল্লী উন্নয়ন পদক-২০২১’ প্রদান করেছে। করায় আমি মনে করি, এটা বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্য। আমি তাদের জন্য এ পদক উৎসর্গ করছি। এই পদকের জন্য আমাকে মনোনয়ন করা মানে বাংলাদেশকে মনোনয়ন করা।’’
তিনি বলেন, ‘সিরডাপ সব সময় তাদের সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে পল্লী উন্নয়নের ওপর কাজ করে। সেখান থেকে একটা পুরস্কার পাওয়া- এটা শুধু আমার জন্য দেশের জন্যও অত্যন্ত সম্মানজনক।’
সরকার একেবারে গ্রাম থেকে উন্নয়নের কাজ করছে জানিয়ে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সব সময় লক্ষ্য থাকে যে, দেশের উন্নয়নটা তৃণমূল থেকে হবে, গ্রাম থেকে হবে। ভিলেজ থেকে হবে। আর সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই আমরা আমাদের পরিকল্পনা নিয়েছি। যখনই সরকার গঠন করেছি আমরা গ্রামের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম তৃণমূলকে ঘিরে। যেমন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে গিয়ে আমাদের ডিজিটাল সেন্টার প্রথমে কিন্তু সেই চর কুকরি মুকরি থেকে শুরু করি। অর্থাৎ একেবারে রিমোট এলাকা থেকে।’ গ্রামের মানুষকে সাবলম্বী করতে নিজস্ব চিন্তা থেকে প্রথমে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’র নাম পরিবর্তন করে ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন তিনি।
গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য সেবার দেওয়ার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি। যেখানে গ্রামের মানুষ পায়ে হেঁটে স্বাস্থ্য সেবা পেতে পারে।’
সরকারের নানামুখী উদ্যোগের ফলে এখন প্রায় শতভাগ শিশু স্কুলে যাচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শিক্ষার জন্য প্রতি দুই কিলোমিটারের মধ্যে একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় করেছি, যাতে ছেলেমেয়েরা হেঁটে স্কুলে যেতে পারে। আমাদের প্রাইমারি শিক্ষা যেমন অবৈতনিক, তেমনি নারী শিক্ষাও অবৈতনিক। সেইসঙ্গে তৃণমূলে মায়েরা যখন বাচ্চাদের স্কুলে পাঠায় মায়েদের নামে আমরা বৃত্তি দিই।’
সরকার প্রায় শতভাগ মানুষকে সুপেয় পানি এবং স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। মানুষের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাস্থ্য-শিক্ষা, বাসস্থান এগুলো মানুষের মৌলিক চাহিদা। আমাদের যত মানুষ গৃহহীন আছে অর্থাৎ ভূমিহীন-গৃহহীন তাদের বিনা পয়সায় ঘর করে দিচ্ছি। যাতে একটা ঘর পেলে মানুষের কর্মসংস্থান হয়।’
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষকে সহায়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা- এগুলো আমরা দিচ্ছি। সেটাও মানুষের আর্থ-সামাজিক কাজে লাগে। এগুলো সম্পূর্ণ আমাদের নিজস্ব পরিকল্পনা, নিজস্ব চিন্তা ভাবনার ফসল। যার সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে।’
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম
আজিজুল হক পল্লী উন্নয়ন পদক-২০২১ টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা