ডিভিশন পেলেন হাজী সেলিম, চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ
২২ মে ২০২২ ১৭:৩১ | আপডেট: ২২ মে ২০২২ ১৭:৩৮
ঢাকা: অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছিলেন। আদালত তার সেই আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
তবে হাজী সেলিম সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা (সিআইপি মর্যাদা) ও কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পেতে যে আবেদন করেছিলেন, সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (২২ মে) দুপুরে হাজী সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এর বিচারক শহিদুল ইসলাম। তিনিই কারাগারে হাজী সেলিমকে প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা তথা ডিভিশনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদালত কারাবিধি অনুযায়ী হাজী সেলিমকে ডিভিশন দিতে বলেছেন। একইসঙ্গে তাকে চিকিৎসা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে, হাজী সেলিমের পক্ষে আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ সংশ্লিষ্ট আদালতে জামিন, ডিভিশন ও উন্নত চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ চেয়ে তিনটি আলাদা আলাদা আবেদন জমা দেন। পরে আদালত শুনানি নিয়ে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলেও বাকি দুইটি আবেদন মঞ্জুর করেন।
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে হাজী সেলিমের ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করলে হাইকোর্টও সেই সাজা বহাল রাখেন। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় গত ১০ ফেব্রুয়ারি। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এ আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন-
- আত্মসমর্পণ করে কারাগারে হাজী সেলিম
- হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল
- আত্মসমর্পণ করতে আদালতে হাজী সেলিম
- এখনই সংসদ সদস্যপদ হারাচ্ছেন না হাজী সেলিম
- হাজি সেলিমের ১৩ বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের রায় ৯ মার্চ
- হাজী সেলিমের সাজা বহাল, ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমপর্ণের নির্দেশ
- আত্মসমর্পণের আগেই সিআইপি মর্যাদা ও চিকিৎসার আবেদন সেলিমের
আদালতের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাজী সেলিম আত্মসমর্পণ করেননি। বরং গত ৩০ এপ্রিল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে যান হাজী সেলিম। এ খবর জানাজানি হয় ২ মে। পরে অবশ্য ৫ মে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশে ফিরে আসেন তিনি। ওই সময় তার আইনজীবীরা জানান, তিনি আদালতের আদেশে আত্মসমর্পণ করবেন। তবে তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।
হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও ৫৯ কোটি ৩৭ লাখ ২৬ হাজার ১৩২ টাকার তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর রাজধানীর লালবাগ থানায় মামলা করে দুদক। ওই মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল হাজী সেলিমকে দুদক আইনের দুই ধারায় ১৩ বছর কারাদণ্ড দেন বিশেষ জজ আদালত। পাশাপাশি ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
২০২১ সালের ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সেলিমের বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখেন। তবে সম্পত্তির বিবরণী দাখিল না করার দায়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া তিন বছরের সাজা বাতিল করেন আদালত।
সারাবাংলা/এআই/টিআর
আদালতে আত্মসমর্পণ কারাগারে ডিভিশন চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ টপ নিউজ হাজী সেলিম