শ্রীলঙ্কায় সরকার গঠন এ সপ্তাহেই: প্রেসিডেন্ট
১২ মে ২০২২ ১০:২৯
টালমাটাল সময় পার করছে শ্রীলঙ্কা। অর্থনৈতিক সংকটকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে দেশটিতে গণবিক্ষোভের মুখে সরকার পতন হয়েছে। সহিংসতার মুখে পালাতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা মাহিন্দা রাজাপাকসেকে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ঘোষণা দিয়েছেন, এ সপ্তাহেই নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ ও মন্ত্রিসভা গঠনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন করবেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার সংসদকে আরও ক্ষমতা দিতে সাংবিধানিক পরিবর্তন আনা হবে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে। সেই সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ২২৫ আসনের জনপ্রিতিনিধিদের প্রতিনিধিত্ব করবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী ও তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা।
গোটাবায়া রাজাপাকসে এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। দেশকে অরাজক পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করতে হবে। থমকে যাওয়া সরকারি কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হবে। এ কারণে আমি নতুন সরকার গঠনের পদক্ষেপ নিচ্ছি।
বর্তমান অচলাবস্থায় পদত্যাগের দাবিও উঠেছিল দেশটিতে। তবে সেই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া।
দেশটির চলমান পরিস্থিতি নিয়ে অবশ্য উদ্বেগ কাটছে না। এরই মধ্যে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পি নন্দলাল ভিরাসিংহে বলেছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না এলে অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব না।
দেশটির ইতিহাসের বৃহত্তম অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে গত মাসেই ভিরাসিংহেকে গভর্নর নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সমাধান করা না হলে তিনি পদত্যাগের হুমকিও দিয়েছেন।
ভিরাসিংহে বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর কে থাকবেন, তাতে কিছু যায় আসে না। অর্থনীতির পতন ঠেকানোর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনার অন্য কোনো বিকল্প নেই।
শ্রীলঙ্কা বর্তমান ঋণ ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বছরই দেশটির ৭ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের কথা। তবে করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার মজুত মাত্র ৫ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। ফলে দেশটি নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো পণ্য আমদানি করতে পারছে না। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে সহায়তা চেয়েও সাড়া পায়নি শ্রীলঙ্কার সরকার।
এ পরিস্থিতির জন্য শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ও তার ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে এবং তাদের পরিবারকে দায়ী করে আসছে। খাদ্য ও জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয় বা ক্রয়ক্ষমতার বাহিরে চলে যাওয়ায় বিক্ষোভে নেমে পড়েন তারা। বিক্ষোভের মুখে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মাহিন্দা রাজাপাকসে।
চলমান বিক্ষোভে গত সোমবার থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৯ জন নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ সময় আরও ২০০ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
সারাবাংলা/টিআর/এনএস