উত্তর কোরিয়ায় প্রথমবারের মতো কোভিড শনাক্ত, সারাদেশে লকডাউন
১২ মে ২০২২ ০৯:৩৪ | আপডেট: ১২ মে ২০২২ ১২:৪৯
সারা বিশ্বে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে তাণ্ডব চালানোর পর উত্তর কোরিয়ায় প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত হওয়া নমুনায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে জানিয়ে গোটা দেশে জারি করা হয়েছে লকডাউন।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। খবরে বলা হয়েছে, পিয়ংইয়ংয়ে পাওয়া গেছে এই সংক্রমণ।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা কেসিএনএ’র খবরে বলা হয়, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী দুর্ভেদ্য বলয় গড়ে তোলা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সেই বলয় ভেদ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, যার ফলে দেশটি সবচেয়ে বড় জরুরি অবস্থার মুখোমুখি হয়েছে।
কেসিএনএ বলছে, গত ৮ মে পিয়ংইয়ং থেকে সংগ্রহ করা কিছু নমুনায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে ওই শহরে ঠিক কতজনের শরীরে এই সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, তা বলা হয়নি। সংক্রমণের উৎস সম্পর্কেও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হওয়াকে জরুরি পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে দেশটির প্রধান নেতা কিম জং উন তার ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছেন। তবে এর আগেই তিনি সংক্রমণের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন কার্যকর করার নির্দেশ দেন। তিনি জানান, জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জামের সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনে প্রথম ‘অজানা’ ভাইরাস হিসেবে করোনার উপস্থিতি পাওয়া যায়। এরপর গত প্রায় আড়াই বছর সময়ে গোটা বিশ্বকে নাকানিচুবানি খাইয়েছে এই বৈশ্বিক মহামারি। তবে এতদিন পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া দাবি করে আসছিল, দেশটিতে এই ভাইরাসের কোনো উপস্থিতি নেই। তবে সে দাবি নিয়ে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা সন্দেহ পোষণ করে আসছিলেন। কেননা দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের উত্তর কোরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় সাধারণ করোনা সংক্রমণ ছাড়াও ভয়ানক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি ছড়িয়ে পড়েছিল।
এর আগে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বৈশ্বিক ভ্যাকসিন জোটের মাধ্যমে কোভ্যাক্সের আওতায় করোনার ভ্যাকসিন দিতে চাওয়া হয়েছিল উত্তর কোরিয়াকে। তবে সেই ভ্যাকসিন দেশটি নেয়নি। এছাড়া চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেকের ভ্যাকসিনের চালানও প্রত্যাখ্যান করেছে তারা।
ওয়ার্কার্স পার্টির বৈঠকে কিম বলেন, জরুরি কোয়ারেনটাইন ব্যবস্থা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। এর লক্ষ্য, করোনার সংক্রমণ যেন না ছড়াতে পারে তা কার্যকরভাবে নিশ্চিত করা এবং স্বল্পতম সময়ের মধ্যে আক্রান্তদের আরোগ্য করে সংক্রমণের উৎস নির্মূল করা।
উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে এখন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হলেও কয়েকদিন ধরেই দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের গণমাধ্যমে এর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। পিয়ংইয়ংয়ের তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করে— দক্ষিণ কোরিয়ার এমন একটি ওয়েবসাইট এই সপ্তাহেই জানিয়েছিল, নাগরিকদের ‘জাতীয় সমস্যা’র কারণে দ্রুত ঘরে ফিরে ঘরেই অবস্থান করতে নির্দেশ দিয়েছে পিয়ংইয়ং কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবর, উত্তর কোরিয়া তার নাগরিকদের ১১ মে থেকে ঘরে থাকতে বলেছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, অনেকের মধ্যে ফ্লু’তে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষ্মণ দেখা গেছে। তবে এক্ষেত্রে করোনার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
সারাবাংলা/টিআর/এসএসএ