৩০০ আসনে ইভিএমে নির্বাচন করার সক্ষমতা ইসির নেই: সিইসি
১০ মে ২০২২ ১১:০৫ | আপডেট: ১০ মে ২০২২ ১৪:৪৫
ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ব্যালেট পেপার না ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) হবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
মঙ্গলবার (১০ মে) নির্বাচনের কমিশনের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ভোটার তালিকার হালনাগাদ কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা জানান।
সিইসি বলেন, ‘৩০০ আসনে ইভিএমে নির্বাচনের সক্ষমতা কমিশনের নেই। বর্তমানে ১০০টির মতো আসনে ইভিএমে নির্বাচন আয়োজনের সক্ষমতা কমিশনের রয়েছে।’
তাহলে ১০০ আসনে ইভিএমে নির্বাচন করা হবে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কত আসনে ইভিএমে নির্বাচন হবে কি হবে না, সেসব কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
প্রধানমন্ত্রী ইভিএমে নির্বাচনের কথা বলছেন, এ নিয়ে কমিশন কোনো চাপ অনুভব করছে কিনা, এমনে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ইভিএমে হবে না ব্যালটে হবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। তবে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মতামত দিতে পারেন।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আমরা কোনো চাপ অনুভব করছি না। তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে না, আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট নেওয়ার কথা বলেছেন বিষয়টি স্পষ্ট নয়। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোনো পদ্ধতিতে হবে সেই বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবো।’
তিনি বলেন, ‘যত্নসহকারে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।’
এনআইডি পাওয়ার জন্য মানুষের উৎসাহ আছে। কিন্তু ভোটের মাঠে কেনো মানুষ যায় না, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর আমি দেবো না। আমাদের দায়িত্ব ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা। আমাদের কর্মীরা ভোটার তালিকা প্রণয়ন করতে মাঠে যাবে। আপনি যেই প্রশ্নটা করেছেন, সেই প্রশ্নের কোনো মন্তব্যই আমি করবো না।’
ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো মধ্যে যে আলোচনা হচ্ছে সেটি নিয়ে কী করবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘সেটি নিয়ে পত্রিকায় আসছে এবং আমাদের বক্তব্যগুলো আপনাদের জানানো হয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠান করার দায়িত্ব আমাদের। হয়তো আপনারা বলতে পারেন যে প্রধানমন্ত্রী একটি বক্তব্য দিয়েছেন এবং বিভিন্নজন থেকে বক্তব্য আসতে পারে। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নাকি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেছেন বিষয়টি এখনো স্পষ্ট না। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলা, বিএনপির প্রধান বলা, জাসদের আব্দুর রবের বলা এগুলো ভিন্ন জিনিস।’
‘আর সব থেকে কথা যেটি স্পষ্ট করে বলতে চাচ্ছি, অনেকে ইচ্ছা পোষণ করতে পারেন, সদিচ্ছা ব্যক্ত করতে পারেন আর ইভিএমে ভোট দেওয়ার বিষয়ে আমরা এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। ইতিমধ্যে আমরা নিজেরা অনেকগুলো সভা করেছি, আগামীতে আরও সভা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত হবে আমাদের। ভোট স্বাধীনভাবে আমরা পরিচালনা করবো যতদূর সম্ভব।এটা আমাদের এখতিয়ারভূক্ত, পদ্ধতিও আমাদের এখতিয়ারভূক্ত’, বলেন সিইসি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সিদ্ধান্ত আমাদের উপরেই থাকবে। মতামত আমরা বিবেচনায় নিতে পারি। আপনিও মতামত দিতে পারেন, রাস্তায় কেউ মতামত দিতে পারেন, রাজনৈতিক দলগুলো মতামত দিতে পারবেন। আল্টিমেটলি আমরা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো ভোট কোন পদ্ধতি ও কেমন হবে। সেটি আমাদের বিষয়। এই বিষয়ে আমরা স্বাধীন।’
এর আগে, প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের শুদ্ধ ও সিদ্ধভাবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা দিয়ে সিইসি বলেন, ‘শুদ্ধ ও সঠিক ভোটার তালিকা ছাড়া প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠন সম্ভব নয়।’
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে দলের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন। দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট হবে ইভিএমে।
সারাবাংলা/জিএস/এমও