ঠাকুরগাঁওয়ে জ্বালানি তেলের সংকট
৫ মে ২০২২ ২২:৫৫ | আপডেট: ৬ মে ২০২২ ১১:৫০
ঠাকুরগাঁও: জেলার ফিলিং স্টেশনগুলোতে জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ফিলিং স্টেশনগুলোতে পেট্রোল পাওয়া যাচ্ছে না। কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ জ্বালানি তেল সংকট দেখা যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন যানবাহন চালকরা।
ডিপো থেকে পেট্রোল সরবরাহ বন্ধ থাকায় এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন পেট্রোল পাম্প কর্তৃপক্ষ ও খুচরা বিক্রেতারা। তবে কবে নাগাদ এই সমস্যার সমাধান মিলবে তা কেউ বলতে পারছেন না। সংকটের শুরুতে বাধ্য হয়ে বিকল্প হিসেবে অকটেন ব্যবহার করছিলেন আরোহীরা।
বৃহস্পতিবার (৫ মে) থেকে কিছু ফিলিং স্টেশনে অকটেনও শেষ হয়ে গেছে জানিয়ে স্টেশন বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে অকটেনের সংকটও শুরু হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন জেলাবাসী।
মোটরসাইকেল চালক লিয়াকত আলী বলেন, ‘ঈদের তিন দিন আগ থেকে পেট্রোল পাচ্ছি না। কী কারণে পেট্রোল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে তা সঠিক উত্তর দিতে পারে না ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষ। এতে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।’ একই কথা বলেন সালন্দর ইউনিয়নের মোটরসাইকেল চালক মামুন উর রশীদসহ অনেকে।
পেট্রোল সংকটের বিষয়ে কাদের ফিংলি স্টেশনে ম্যানেজার রুহুল আমিন বলেন, ‘ডিপো থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তবে কী কারণে বন্ধ সেটা আমাদের জানানো হয়নি। এদিকে পেট্রোল না দিতে পারায় গ্রাহকরা ফিরে যাচ্ছেন।’
চৌধুরী ফিলিং স্টেশনে কয়েকটি বড় গ্যালন নিয়ে এসেছিলেন প্রাইভেটকার চালক সৌরভ। গ্যালন নিয়ে আসার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমার গাড়ি পেট্রোলে চলে। পেট্রোল না থাকায় এতদিন অকটেন ব্যবহার করছিলাম। এখন অকটেনও পাওয়া যাচ্ছে না।’
জ্বালানি তেল সংকটে বন্ধ হয়ে যাওয়া ‘বাঁধক-কাঁকন ফিলিং স্টেশনে’র ম্যানেজার রশিদুলাম ইসলাম জানান, ইদের আগেই তাদের পেট্রোল শেষ হয়ে গেছে। এতে অকটেনের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এখনও অকটেন শেষ হয়ে গেছে।
মেসার্স সুরমা ফিলিং স্টেশনের মালিক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘পেট্রোল সরবরাহ না থাকায় এবার ঈদে ব্যবসার চরম ক্ষতি হয়েছে। ডিপো থেকে সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছি। আশা করি দ্রুত এর সমাধান হবে।’
ঠাকুরগাঁও জেলার পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এনামুল হক জানান, জেলায় ফিলিং স্টেশনের সংখ্যা ৩৬টি। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় ২৪টি, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ২টি, হরিপুর উপজেলায় ২টি, রাণীশংকৈল উপজেলায় ৪টি ও পীরগঞ্জ উপজেলায় ৪টি ফিলিং স্টেশন রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জেলায় দৈনিক জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৯০ হাজার লিটার। এরমধ্যে পেট্রোল ২৩ হাজার লিটার, অকটেন সাড়ে ১৬ হাজার লিটার এবং ডিজেল ৫০ হাজার লিটার। এখন জেলায় প্রায় ১৪ হাজার লিটার পেট্রোল সরবরাহ কম হচ্ছে। ফলে এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।’
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘জেলায় জ্বালানি তেলের সংকট হওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। কেবল অবগত হলাম। তেল সংকটের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে জ্বালানি তেলের সংকট তৈরি করে থাকে তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/এমও