দেশে ফিরেছেন হাজী সেলিম
৫ মে ২০২২ ১৩:৩৭ | আপডেট: ৫ মে ২০২২ ১৫:২১
ঢাকা: জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিম দেশে ফিরেছেন। চিকিৎসার জন্য তিনি থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছিল।
ইমিগ্রেশন ও বিমানবন্দর সূত্র সারাবাংলাকে জানিয়েছে, থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩২১ ফ্লাইটে দেশে ফেরেন হাজী সেলিম। বৃহস্পতিবার (৫ মে) দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সূত্র আরও জানিয়েছে, হাজী সেলিমকে নেওয়ার জন্য বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক এবং মদীনা গ্রুপের কর্মীরা।
এর আগে, গত শনিবার (৩০ এপ্রিল) শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে যান হাজী সেলিম। তবে এ খবর জানাজানি হয় সোমবার (২ মে)।
আরও পড়ুন-
- হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল
- এখনই সংসদ সদস্যপদ হারাচ্ছেন না হাজী সেলিম
- হাজি সেলিমের ১৩ বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের রায় ৯ মার্চ
- হাজী সেলিমের সাজা বহাল, ৩০ দিনের মধ্যে আত্মসমপর্ণের নির্দেশ
ওই সময় হাজী সেলিমের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানান, তিনি চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড গেছেন। তবে কোন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বা কবে ফিরবেন, এসব বিষয়ে কেউ সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি।
দুদকের দায়ের করা মামলায় নিম্ন আদালতের পর হাইকোর্ট থেকেও হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল থাকায় অনেকেই ধারণা করেছিলেন, তিনি হয়তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশ ছেড়ে গেছেন। এ নিয়ে বিরোধী দলগুলোও সরব হয়ে ওঠে।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে হাজী সেলিমের ১০ বছর সাজা বহাল রেখে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় গত ১০ ফেব্রুয়ারি। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এ আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে এখনো আত্মসমর্পণ করেননি হাজী সেলিম।
হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও ৫৯ কোটি ৩৭ লাখ ২৬ হাজার ১৩২ টাকার তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর রাজধানীর লালবাগ থানায় মামলা করে দুদক। ওই মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল হাজী সেলিমকে দুদক আইনের দুই ধারায় ১৩ বছর কারাদণ্ড দেন বিশেষ জজ আদালত। পাশাপাশি ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
গত বছরের ৯ নভেম্বর হাজী সেলিমের মামলাটি হাইকোর্টে দ্রুত শুনানির জন্য কার্যতালিকাভুক্ত করতে উপস্থাপন করা হয়। একদিন পর ১১ নভেম্বর মামলার বিচারিক আদালতে থাকা যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করেন হাইকোর্ট। পরে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখেন। তবে সম্পত্তির বিবরণী দাখিল না করার দায়ে দেওয়া তিন বছরের সাজা বাতিল করেন আদালত।
হাইকোর্টের রায়ে সাজা বহাল থাকায় হাজী সেলিমের সংসদ সদস্যপদ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। কেননা, সংবিধানের ৬৬ (১) (ঘ) ধারায় বলা আছে, কোনো ব্যক্তি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী হয়ে ন্যূনতম দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা হারাবেন।
তবে হাজী সেলিমের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশের পর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে আপিল করার সুযোগ আছে। তারা নিয়ম মেনে আপিলও করবেন। আপিলের রায়ের ওপর বাকি সব বিষয় নির্ভর করবে।
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর
১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত টপ নিউজ ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য দুদকের মামলা দেশে ফিরেছেন হাজী সেলিম