Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্বস্তির ইদে মহানন্দে চট্টগ্রামবাসী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩ মে ২০২২ ১১:৩৭ | আপডেট: ৩ মে ২০২২ ১৭:৩০

চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনা মহামারিকাল ‘কাটিয়ে’ স্বস্তির পরিবেশে নিশঃঙ্কচিত্তে মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ইদুল ফিতরের মহানন্দে মেতেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের মানুষ। দুই বছর পর চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের উন্মুক্ত ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইদুল ফিতরের জামাত। একসঙ্গে সম্মিলন ঘটেছিল প্রায় অর্ধলক্ষ মুসল্লির।

মঙ্গলবার (৩ মে) সকাল ৮টায় জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গনে ইদুল ফিতরের প্রথম ও প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। রোদ আর গরমকে সঙ্গী করেই মুসল্লিরা সমবেত হন ইদ জামাতে। নগরীর অন্যান্য স্থানেও ইদুল ফিতরের নামাজে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসায় মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেছেন ইমাম ও মুসল্লিরা। সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া কবুল ও ক্ষমা প্রার্থনা করে এসময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বিজ্ঞাপন

জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে ইদুল ফিতরের প্রথম ও প্রধান জামাতে ইমামতি করেন খতিব সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আল কাদেরী। সকাল ৯টায় দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন একই মসজিদের পেশ ইমাম আহমেদুল হক।

ইদুল ফিতরের প্রধান জামাতে রাজনীতিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সম্মিলন ঘটে। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক মেয়র ও জাতীয় পার্টির নেতা মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, নগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ফরিদ মাহমুদসহ শীর্ষ নেতারা প্রথম জামাতে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে তারা পরস্পরের সঙ্গে আলিঙ্গন করে ইদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে আমরা দুই বছর যে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে সময় পার করেছি, এবার সেই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। সংক্রমণ কমে এসেছে। সেজন্য আমরা মুক্ত পরিবেশে সুন্দরভাবে এবার ইদুল ফিতর উদযাপন করতে পারছি। এজন্য আমি মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। তবে করোনার সংক্রমণ পুরোপুরি চলে গেছে, এটা যেন আমরা না ভাবি। স্বাস্থ্যবিধি যেন আমরা মেনে চলি। আমি আমার সংসদীয় এলাকার জনগণসহ সর্বস্তরের জনসাধারণকে ইদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের যে উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা, এর সঙ্গে জনগণ একাত্ম থেকে যেন দেশকে এগিয়ে নেওয়ার পথে সহযোগিতা করে সেই অনুরোধ করছি।’

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী নগরীর বহদ্দারহাটে নিজ বাড়ির পাশে মসজিদে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে নিজ বাড়ির প্রাঙ্গনে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘পবিত্র ইদুল ফিতর উপলক্ষে আমি চট্টগ্রাম নগরবাসীকে শুভেচ্ছা জানাই। সিটি করপোরেশনের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে নগরবাসী যাতে সহযোগিতা করে আমি সেই কামনা করছি।’

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে নগরীর সুগন্ধা আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, হযরত শেখ ফরিদ চশমা ঈদগাহ মসজিদ, চকবাজার সিটি করপোরেশন জামে মসজিদ ও মা আয়েশা সিদ্দিকী চসিক জামে মসজিদে (সাগরিকা জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম সংলগ্ন) ইদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে ১টি করে প্রধান ইদ জামাত স্ব স্ব মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে ইদের নামাজ আদায় করেন।

সিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার (জনসংযোগ) শাহাদাত হোসেন রাসেল সারাবাংলাকে বলেন, ‘জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে প্রথম জামাতে কয়েক হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন। খোলা ময়দানে নামাজের ব্যবস্থা করায় এবার ব্যাপকভাবে মুসল্লির সমাগম হয়েছে।’

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনের মাঠে ইদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৯টায় ইদ জামাতে ইমামতি করেন বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. সাইয়েদ মুহাম্মদ আবু নোমান। কেন্দ্রীয় ইদ জামাত কমিটির আওতাভুক্ত নগরের ৯৪টি স্থানে ইদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চট্টগ্রাম নগরীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া র‌্যাবের টহল টিমও নগরীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছে।

এডিসি শাহাদাত সারাবাংলাকে বলেন, ‘নগরীতে প্রায় ২৫০ মসজিদে ইদের জামাতকে কেন্দ্র করে পুলিশ মোতায়েন ছিল। ইদ জামাত শেষে নগরীর প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে টহল শুরু হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্পটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। দুপুরের পর আবাসিক এলাকা ও অলিগলিতে টহল শুরু হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে কোনো অবনতি না হয়, সেজন্য আমরা সতর্ক আছি।’

সারাবাংলা/আরডি/এমও

চট্টগ্রামবাসী টপ নিউজ ধর্মীয় উৎসব মহানন্দ স্বস্তির ইদ