শোলাকিয়া ইদগাহ মাঠে জঙ্গি হামলা ছিল না: ডিএমপি কমিশনার
১ মে ২০২২ ১৯:৩৩ | আপডেট: ১ মে ২০২২ ২০:৪৬
ঢাকা: কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ইদ জামাতে ছয় বছর আগে যে হামলা হয়েছিল, সেটি জঙ্গি হামলা ছিল না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, ওই হামলাটি করা হয়েছিল ব্যক্তি আক্রোশ থেকে। ওই মাঠে যিনি ইমামতি করেছিলেন, তার প্রতি কিছু মানুষের ক্ষোভ ছিল। সেই ক্ষোভ থেকেই হামলাটি চালানো হয়। ফলে সেটি কোনো জঙ্গি হামলা ছিল না।
রোববার (১ মে) সকাল ১১টার দিকে জাতীয় ইদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
২০১৬ সালের ৭ জুলাই কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ইদগাহ মাঠের অদূরে আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে ঈদুল ফিতরের নামাজের সময় আগে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা নির্মমভাবে চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পুলিশের দুই কনস্টেবলকে। পরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়, পুলিশের গুলিতে হামলাকারীদের এক জনের মৃত্যু হয়। দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির সময় নিজ বাসায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন এক জন গৃহবধূ।
এতদিন ধরে শোলাকিয়ার সেই হামলাটি জঙ্গি হামলা হিসেবেই জেনে আসছে সবাই। সেই হামলার ৬ বছর পর ডিএমপি কমিশনার জানালেন, সেটি জঙ্গি হামলা ছিল না।
এবারের ইদুল ফিতরে এ ধরনের কোনো হামলার আশঙ্কা নেই জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ইদ জামাত-কেন্দ্রিক নাশকতা বা জঙ্গি হামলার কোনো তথ্য নেই। আর ইদ জামাতে এরকম কোনো হামলা হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। এর আগে যেটি হয়েছে, সেটি নিছকই ব্যক্তিকেন্দ্রিক। পুলিশ বাধা দিয়েছে বড় ধরনের নাশকতা এড়াতে। আর এতেই পুলিশের ওপর হামলা করে তারা।
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার ওই হামলায় ২৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়। ওই সময় আহত অবস্থায় শফিউল ইসলাম ডন নামে এক সশস্ত্র এবং তানিম নামে স্থানীয় এক সন্দেহভাজন যুবক আটক হয়েছিলেন। আর ২০১৯ সালের ৭ জুলাই পর্যন্ত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছেন সেই আসামিদের ১৯ জন। পরে মামলার জীবিত পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছিল।
বর্তমানে এই পাঁচ আসামি কারাগারে রয়েছেন। তারা হলেন— কিশোরগঞ্জ শহরের তারাপাশা এলাকার জাহিদুল হক তানিম, গাইবান্ধার রাঘবপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাজারদিঘা গ্রামের মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, গাইবান্ধার পান্থাপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও কুষ্টিয়ার সাদিপুর কাবলিপাড়া গ্রামের আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ।
কিশোরগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক জানিয়েছেন, চাঞ্চল্যকর এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়েছে। আসামিদের প্রায় সবাই হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা মামলারও আসামি।
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর