Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নিউমার্কেটে ককটেল বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগ, নিষ্ক্রিয় পুলিশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৯ এপ্রিল ২০২২ ১৩:৪২ | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২২ ১৫:১৬

ফাইল ছবি

ঢাকা: রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছেই। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে শুরু হয়ে দুপুর দেড়টার দিকেও তাদের মধ্যে এই সংঘর্ষ অব্যাহত আছে। চলছে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। দুপুরের দিকে ওই এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া গেছে। চন্দ্রিমা ও নূরজাহান মার্কেট অগ্নিসংযোগের খবরও মিলেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আগের রাতের সংঘর্ষের পর সকাল থেকেই গোটা এলাকায় ছিল থমথমে ভাব। ১১টার পর থেকেই এই এলাকা রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়য়। তবে গোটা এলাকায় সকাল থেকেই পাওয়া যায়নি পুলিশের উপস্থিতি। বেলা বাড়লে দুপুর নাগাদ পুলিশ ঘটনাস্থলে এলেও তাদের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।

বিজ্ঞাপন

নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের এই সংঘর্ষের সূত্রপাত সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে। এরপর মধ্যরাত পর্যন্ত নিউমার্কেট এলাকায় তাদের মধ্যে চলে সংঘর্ষ। রাত দেড়টার দিকে সে সংঘর্ষ থেমে গেলেও সকাল ১১টার পর ফের দুই পক্ষই আপসহীন মনোভাব নিয়ে অব্স্থান নিলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

আরও পড়ুন- শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষে নিউমার্কেট আবারও রণক্ষেত্র

মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে নীলক্ষেত-নিউমার্কেট এলাকা সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নীলক্ষেতের দিকে সড়ক থাকা আইল্যান্ডের লোহার রড ভেঙে অবস্থান নিয়েছেন হাজারও ব্যবসায়ী। তারা টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক বন্ধ করে দিয়েছেন। অন্যদিকে সায়েন্স ল্যাবের দিকে অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের সংখ্যাও সহস্রাধিক।

সকাল থেকে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা চন্দ্রিমা মার্কেটের ছাদে উঠে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করছেন। এছাড়া ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের হাতে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া গণমাধ্যমকর্মীদের হেনস্থা ও শারীরিকভাবে জখম হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদেরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। সেখানে আহত কমপক্ষে ২০ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়রা মনে করছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না নিতে পারলে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যেকার এই সংঘর্ষ ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাবে। হতাহতের আশঙ্কা ছাড়াও সংঘর্ষের কারণে গোটা এলাকার যানচলাচল সকাল থেকেই বন্ধ থাকায় রাজধানীর সার্বিক যানচলাচল পরিস্থিতিও ক্রমেই নাজুক হয়ে উঠছে।

আরও পড়ুন- নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ

এমন পরিস্থিতিতেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দীর্ঘ সময় সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির মধ্যেও পুলিশের উপস্থিত না থাকা এবং একটা সময়ে পুলিশ এসে অবস্থান নিলেও সক্রিয় ভূমিকা পালন না করায় ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তবে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে নিউমার্কেট জোনের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের মোবাইল নম্বরে কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে দায়িত্বর পুলিশ সদস্যরাও কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছেন না।

তবে নামপ্রকাশে কয়েকজন পুলিশ সদস্য অভিযোগ করেছেন, রাত থেকেই তারা এই এলাকায় ডিউটি করছেন। দীর্ঘসময়েও কোনো শিফট পরিবর্তন করা হয়নি। তারা বেশ ক্লান্ত। শিফট পরিবর্তনের উদ্যোগও তারা দেখছেন না।

এদিকে নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট আশরাফউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, তারা সকাল থেকেই মার্কেট সম্পূর্ণ বন্ধ রেখেছেন। ফলে ব্যবসায়ীরা কেউ সড়কে নেই। হকার বা অন্য কেউ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে থাকতে পারে। কিন্তু তারা কোনোভাবেই তাদের ব্যবসায়ীদের কেউ নন।

অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থান এবং সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে কাজ করছে বলে মনে করছেন তারা। পুলিশ দ্রুত ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে তারাও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হতে পারেন।

সারাবাংলা/এসএসএ/ইউজে/এএম/টিআর

নিউমার্কেটে সংঘর্ষ পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষ

বিজ্ঞাপন

‘আরও কঠিন পথ পারি দিতে হবে’
৯ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:৫৬

আরো

সম্পর্কিত খবর