Friday 03 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক থেকে শ্রমজীবী— সব নারীই সহিংসতার শিকার’

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
১ এপ্রিল ২০২২ ১৮:১৯ | আপডেট: ১ এপ্রিল ২০২২ ২০:৪৩

শ্রমজীবী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক— সব ধরনের পেশায় নিযুক্ত নারীই সহিংসতার শিকার হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।

তিনি বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অনেক অগ্রগতি আছে। নিজের যোগ্যতা দিয়ে নারী এই অগ্রগতিতে যুক্ত হয়েছে। সে জন্যই বিভিন্ন জায়গায় নারী আজ প্রতিষ্ঠিত। এই অগ্রগতি নারীকে কেউ দেয়নি, সে অর্জন করে নিয়েছে। কিন্তু তারপরও সব নারী সহিংসতার শিকার হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা থেকে শুরু করে দূতাবাসের কর্মকর্তা, পুলিশে কর্মরত নারী কিংবা শ্রমজীবী নারী— সবাই সহিংসতার শিকার হচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে সামনে রেখে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফাওজিয়া মোসলেম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব যারা পরেন, তারা একটি কমিটি গঠন করেছেন। তারা বলছেন, তাদের হিজাব পরতে দেওয়া হচ্ছে না বলে এই কমিটি করেছেন। তাদের সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়েছেন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের ছাত্রনেতা। আমরা বলতে চাই, আমরা কেউ ধর্মবিরোধী নই। সবাই নিজেদের ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুন। অনুশাসন মেনে পোশাক পরতে পারেন। কিন্তু সচেতন থাকতে হবে আমাদের। যারা ধর্মের কথা বলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, যারা নারীর সমতায় বিশ্বাস করে না, নারীমুক্তি কথা বলে না, তাদের থেকে সাবধান থাকতে হবে।

এর আগে ‘সমতার চেতনা প্রতিষ্ঠা করি, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে শক্তিশালী নেতৃত্ব গড়ে তুলি’ স্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় পতাকা ও সংগঠনটির পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম। এতে তিনি মোট ৬৪টি দাবি উত্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ডা. মালেকা বানু। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ৫২ বছরের পদযাত্রা গর্বের ও আনন্দের। আমাদের লক্ষাধিক সদস্যের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমাদের পূর্বসূরীরা পাথর কেটে আমাদের জন্য পথ তৈরি করেছেন। তাদের আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। নারী এখন দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে প্রস্তুত। নারী আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে, সমুদ্রে ঝাঁপ দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আজকের দিনে নারী তার মস্তিষ্ক ও দুই হাত দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার বিশাল কর্মযজ্ঞে অংশ হচ্ছে। সমাজকে তারা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে— আমরাও পারি। কিন্তু আমাদের যে সমতার চেতনা, সেটা আমরা কতদূর ছড়িয়ে দিতে পারছি? নারীর প্রতি সহিংসতা এখনো চলছে। এটি নারীর মর্যাদা ও অধিকারকে ভূলুণ্ঠিত করছে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক হাসিনা খান বলেন, আমি দূর থেকে সংগঠনটির কথা শুনেছি। আমি মনে করি— বিজ্ঞান গবেষণা অনেক সহজ। পুরুষদের উদ্যোক্তা হওয়া অনেক কঠিন। সেখানে নারীদের উদ্যোক্তা হওয়া আরও কত কঠিন কাজ!

তিনি বলেন, এখন নারীদের মধ্যে প্রচণ্ড সাহস। আপনারা ৫২ বছর ধরে সে সাহস জুগিয়ে আসছেন। আমার শিক্ষাজীবনে গবেষণাগারে সময় কাটাতে হতো। তখন আমার বাবা কেবল ড্রাইভার পাঠিয়ে স্বস্তি পেতেন না। আমার ভাই আসত আমাকে নিতে। এখন  নারী শিক্ষার্থীরা রাত করে ল্যাবে কাজ করে। যখন বলি এত রাতে বাসায় যাবে কীভাবে, তারা যেন কানেই নেয় না। তাদের মধ্যে এই যে সাহস, সেটা আপনারা জুগিয়ে আসছেন।

অধ্যাপক হাসিনা খান বলেন, আমাদের শরীরে এমন কোনো জিন নেই, যে জিনটা বলে— আপনি পুরুষ, তাই আপনি বাসায় কাজ করতে পারবেন না! আমাদের শরীরে এমন কোনো জিন কোনো পুরুষও আজ পর্যন্ত আবিষ্কার করতে পারেনি!

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক উম্মে সালমা বেগমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিল্প নির্দেশক অশোক কর্মকার, বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক শাহানা জেফরীনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আরআইআর/টিআর

টপ নিউজ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মহিলা পরিষদ

বিজ্ঞাপন

না ফেরার দেশে অঞ্জনা
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৫৪

এই তাসকিনকে সমীহ করবেন যে কেউ
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৪৭

আরো

সম্পর্কিত খবর