২ কৃষকের আত্মহত্যা: স্বজনদের সঙ্গে কথা বলল তদন্ত কমিটি

রাজশাহী: গোদাগাড়ীতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর দুই কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। কমিটির সদস্যরা এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় কৃষক ও মৃতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তদন্ত কমিটির সদস্যরা গোদাগাড়ীর ঈশ্বরীপুর ও নিমঘুটু গ্রামে ছিলেন।

সারাবাংলা ডটনেটে ‘জমিতে পানি দেয়নি পাম্প অপারেটর, ক্ষোভে কৃষকের আত্মহত্যা’ শিরোনামের সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তাসনিম জেবিন বিনতে শেখ চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দেন।

কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং) আবু জুবাইর হোসেন বাবলুকে। কমিটিতে সদস্য হিসেবে নাটোর বিএডিসির (ক্ষুদ্রসেচ) নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী সমশের আলী এবং জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক।

আরও পড়ুন- সেচের পানি না পেয়ে ২ কৃষকের আত্মহত্যা: মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কমিটির সদস্যরা প্রথমে বিএমডিএ’র গভীর নলকূপটি পরিদর্শন করেন। এরপর তারা দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ে বসে কয়েকজন ব্যক্তির সাক্ষ্য নেন। এরপর মৃত কৃষক অভিনাথ মারান্ডি এবং তার চাচাতো ভাই রবি মারান্ডির জমি পরিদর্শনে যান। পরে তদন্ত কমিটির সদস্যরা অভিনাথের বাড়ির সামনে গিয়ে দুই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন।

এসময় কৃষকদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, পানি না দেওয়ার কারণে দুই কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। তবে এর আগে ইউপি কার্যালয়ে কয়েকজন গভীর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের পক্ষ নিয়ে সাফাই গান। তারা দাবি করেন, পানি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কৃষকেরা দেশীয় মদ পান করেন। এ কারণেই হয়তো তাদের মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন- জমিতে পানি না দেওয়ায় বিষপান করা আরেক কৃষকেরও মৃত্যু

তদন্ত কমিটির প্রধান আবু জুবাইর হোসেন বাবলু বলেন, ‘আমাদের তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। আমার হাতে সাত দিন সময় আছে। দুই কৃষকের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী হলে অবশ্যই সেটি তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসবে।’

এর আগে, গত ২১ মার্চ রবি ও অভিনাথ বিষপান করেন। সেদিনই বাড়িতে অভিনাথের মৃত্যু হয়। দুই দিন পর হাসপাতালে মারা যান রবি। মৃত্যুসনদে বলা হয়েছে, বিষক্রিয়ায় রবির মৃত্যু হয়েছে। দুই কৃষকের মরদেহের ময়নাতদন্ত হলেও প্রতিবেদন এখনো প্রস্তুত হয়নি।

আরও পড়ুন- জমিতে পানি দেয়নি পাম্প অপারেটর, ক্ষোভে কৃষকের আত্মহত্যা

দুই কৃষকের মৃত্যুর জন্য গভীর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াতকে দায়ী করে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় দু’টি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করা হয়েছে। প্রথম মামলাটি হওয়ার পরই সাখাওয়াত পালিয়েছেন। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

সারাবাংলা/টিআর

২ কৃষকের আত্মহত্যা জমিতে সেচ টপ নিউজ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি