Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিমা করে আসল টাকাও ফেরত পাচ্ছেন না যুবক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৩ মার্চ ২০২২ ০৯:০০

নেত্রকোনা: জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলায় ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি বিমা প্রতিষ্ঠানে সঞ্চয় করা টাকা তুলতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন গ্রাহকরা। দুই বছর পর বিমার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও টাকা তুলতে না পাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তেমনি এক ভুক্তভোগী যুবক আকিকুল ইসলাম অপু। ২০২০ সালে ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্সের ওই শাখায় একটি বিমা করেন তিনি। ভুক্তভোগী অপু পৌর শহরের টেংগাপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে অপু জানান, মোহনগঞ্জের কলেজ রোডে থাকা ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্স নামে ওই বিমা প্রতিষ্ঠানে মাসে পাঁচ হাজার টাকা সঞ্চয়ে বিমা করি। তবে আট মাস পর কার্যালয়টি বন্ধ হয়ে যায়। জেলাতে তাদের কার্যক্রম চলে যায়। এতে ভীত হয়ে টাকা তুলে নিতে চাই। কিন্তু বিমা প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয় বছর পূর্ণ হওয়ার পরই পুরো টাকা তোলা যাবে। ফলে আগের টাকা ফিরে পাওয়ার আশায় বাধ্য হয়েই আরও চার মাস টাকা জমা করি। বছর শেষে সঞ্চয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ৬০ হাজার টাকা। বছর পূর্ণ হওয়ার পর টাকা তুলতে গেলে জানানো হয়- ‘দুই বছর পার না হলে টাকা তোলার আবদেন করা যাবে না।’ তবে পরে আর কোনো টাকা জমা না করে এভাবেই আরও বছর পার করি।

তিনি আরও বলেন, ‘২০২২ সালে দুই বছর পূর্ণ হওয়ার পর টাকা তুলতে গেলে আজ-কাল পরশু করে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে বিমা কোম্পানির লোকজন। তাদের ওপর আর আস্থা রাখতে পারছি না। বিমা করার পর টাকা তুলতে গিয়ে যদি এমন হয়রানির শিকার হতে হয়, তাহলে মানুষ বিমার প্রতি আস্থা হারাবে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লিমিটেড নামে এক বিমা প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সালে মাঝামাঝি সময়ে মোহনগঞ্জের টেংগাপাড়া কলেজ রোড এলাকায় তাদের সাংগঠনিক কার্যালয় খুলে। পরে লোকসানের কারণে ১৯২০ সালের অক্টোবরে শাখাটি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। শাখার দায়িত্বে ছিলেন জেলা সার্ভিস সেল’র নির্বাহী পরিচালক ফারজানা আক্তার পপি।

বিজ্ঞাপন

আরও জানা যায়, ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্সের প্রথম শাখাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর স্থানীয় ওয়াহিদুজ্জামান খান নান্টু নামে এক ব্যক্তি পৌর শহরের অন্য প্রান্তে পুনরায় ওই প্রতিষ্ঠানের শাখা কার্যালয় খুলেন। কিন্তু ৩-৪ মাস পরে কার্যলয়টি বন্ধ করে দেন।

ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্সের দ্বিতীয় শাখাটির প্রধানের দায়িত্ব পালনকারী ওয়াহিদুজ্জামান খান নান্টু বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আমার পছন্দ হয়নি। কাজকর্মে তাদের বিরাট ঘাপলা আছে। যেহেতু আমি স্থানীয়, এখানকার মানুষ আমাকে দেখে বিমা করবে। পরে টাকা না পেলে আমাকে দায়ী করবে। তাই বিপদে পড়ার আগেই কার্যালয় বন্ধ করে দিয়ে তাদের সঙ্গে লেনদেন শেষ করেছি।’

তবে অভিযুক্ত জেলা সার্ভিস সেল’র নির্বাহী পরিচালক ফারজানা আক্তার পপি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘দুই বছর পূর্ণ না হলে আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা তোলার নিয়ম নেই। অপুর বিমার মেয়াদ দুই বছর পূর্ণ হয়েছে তাই তিনি এখন টাকা তোলার আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার দুই-তিন মাস পর টাকা পেয়ে যাবেন। তবে আমি একটু দরকারে জেলার বাহিরে অবস্থান করায় অপু হয়তো যোগাযোগ করতে পারেননি। সেজন্য সমস্যা হয়েছে। এ ছাড়া আর কিছু নয়।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহম্মেদ আকুঞ্জি বলেন, কয়েকদিন আগে বিমা দিবস গেল। ওখানে অনেকেই বিমা প্রতিষ্ঠানের নানা হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জেনে বুঝে বিমা করা উচিত। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

সারাবাংলা/এনএস

টপ নিউজ ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লিমিটেড নেত্রকোনা মোহনগঞ্জ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর