প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৩ টাকা ১১ পয়সা বাড়ানোর পক্ষে সুপারিশ
২১ মার্চ ২০২২ ১৯:০৮ | আপডেট: ২১ মার্চ ২০২২ ২২:০২
ঢাকা: একদিকে বিশ্ববাজারে জ্বালানির বাড়তি মূল্য, অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই বিতরণ কোম্পানির গ্যাসের দাম বাড়ানোর পক্ষে সায় দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। প্রতিষ্ঠানটি গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৯ টাকা ৩৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১২ টাকা ৪৭ পয়সা নির্ধারণের সুপারিশ করেছে। সুপারিশ অনুযায়ী প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম বাড়বে ৩ টাকা ১১ পয়সা।
সোমবার( ২১ মার্চ) রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বিইআরসির গণশুনানিতে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সুপারিশ করে কারিগরি কমিটি। সেখানে প্রতি ঘন মিটারে ৩ টাকা ১১ পয়সা বাড়ানোর পক্ষে মত দেন বিইআরসি গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক পরিচালক (গ্যাস) দিদারুল আলম।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৯ টাকা ৩৬ পয়সা। সেই দাম বাড়িয়ে ১২ টাকা ৪৭ পয়সা নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। একদিকে দেশে গ্যাসের ঘাটতি, অন্যদিকে বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিইআরসির কাছে মিশ্রিত গ্যাসের পাইকারি ব্যয় ১৫ দশমিক ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ দশমিক ৩৫ টাকা করার প্রস্তাব দেয় পেট্রোবাংলা। পেট্রোবাংলার সুপারিশ পর্যালোচনা করে নতুন দাম নির্ধারণের পক্ষে মতামত তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি পেট্রোবাংলাকে অনুদান দেওয়ারও সুপারিশ করেছে বিইআরসি। এর আগে, ২০১৯ সালে গ্যাসের দাম পাইকারি প্রতি ঘনমিটার ১২ দশমিক ৬০ টাকা করা হয়। সেখানে ইউনিট প্রতি ভুর্তুকি দিয়ে ৯ দশমিক ৩৭ টাকায় বিক্রির নির্দেশ দেয় বিইআরসি।
পেট্রোবাংলার তথ্য মতে, দেশে প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে। এর মধ্যে গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে ২ হাজার ২৮৯ মিলিয়ন ঘনফুট তোলা হচ্ছে। আর আমদানি করা হচ্ছে ৭৭০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে খোলাবাবাজার থেকে আমদানি করা হয় ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট। আর বাকিটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ওমান ও কাতার থেকে আমদানি করা হয়। এই পরিমাণ গ্যাস থেকে প্রতিদিন শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনেই প্রয়োজন হয় ৭৬৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। গ্রীষ্ম মৌসুমে চাহিদা বাড়ে আরও ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট। যদিও মোট চাহিদা রয়েছে ২ হাজার ২৫২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের।
সূত্র জানায়, বিশ্ববাজারে এখন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম বাড়তি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, খোলাবাজার থেকে গ্যাস কিনতে হলে মোটা অংকের লোকসান গুনতে হবে। একদিকে এলএনজিতে ভুর্তুকি কম, অন্যদিকে বাজারে দাম বাড়তি- সব মিলিয়ে পেট্রোবাংলাকে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বাড়ানোর পথেই হাঁটতে হচ্ছে।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম