উন্নয়ন প্রকল্পে ৫-৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চায় বিশ্বব্যাংক
১৫ মার্চ ২০২২ ২০:৪৮
ঢাকা: সরকারের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পে বড় অংকের অর্থ বিনিয়োগ করতে চায় বিশ্বব্যাংক। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে সংস্থাটির একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে দেখা করে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেন। বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় বিভাগের পরিচালক (অবকাঠামো) গুয়াংঝি চ্যানের (Guangzhe Chen) নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।
বৈঠক শেষে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দর্শন ‘আমার গ্রাম আমার শহর’সহ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বেশ কয়েকটি প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ৫ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংকসহ যেসব আন্তর্জাতিক ব্যাংক বাংলাদেশকে ঋণ সহায়তা দেওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে। সেগুলো যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে দেশের স্বার্থ রক্ষা করে যেটা লাভজনক এবং কল্যাণকর হবে সেই অর্থ গ্রহণ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকসহ অনেক আন্তর্জাতিক ব্যাংক বাংলাদেশের উন্নয়নে অর্থায়ন করে থাকেন। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ অর্থাৎ ঋণ খেলাপি হয়নি। পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংক টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় নিজস্ব অর্থায়নে করা হয়েছে। তাদের ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার কথা ছিল। সেখানে ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করে পদ্মাসেতুসহ কানেক্টিং রাস্তাও করা হয়েছে। পাশাপাশি আউটার জেলাগুলোকেও কানেক্টিভিটির আওতায় আনা হয়েছে। এ কারণে স্বাভাবিকভাবে বিশ্বব্যাংকসহ সবার কাছে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। যেজন্য আন্তর্জাতিক ব্যাংকসহ অন্যান্য অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বেশ কিছু চলমান প্রকল্প আছে। নতুন আরও কিছু প্রকল্প নিতে হবে। তারা অর্থায়ন করতে রাজি আছে। আমরা যাচাই-বাছাই করছি। এডিবি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, না কি জাইকা থেকে নেব। দেশের স্বার্থ রক্ষা করে যেখানে থেকে সুবিধা হয় আমরা সেই প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ সহায়তা নেব।’
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী আরও বলেন, “২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতিশ্রুতি ছিল ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ দর্শনের। এর মাধ্যমে গ্রামে শহরের সব নাগরিক সেবা পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে সরকার। সরকারে ঘোষণা অনুযায়ী গ্রামে যোগাযোগ ও বাজার অবকাঠামো, আধুনিক স্বাস্থ্য সেবা, মানসম্মত শিক্ষা, সুপেয় পানি, তথ্যপ্রযুক্তি সুবিধা ও দ্রুতগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা, উন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, কমিউনিটি স্পেস ও বিনোদনের ব্যবস্থা, ব্যাংকিং সুবিধা, গ্রামীণ কর্মসংস্থান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি, কৃষি আধুনিকায়ন ও যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধিসহ সব সুবিধা রাখা হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ভিন্ন ভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর এ দর্শন বাস্তবায়ন করবে।”
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের গ্রামীণ অবকাঠামোর নির্মাণ, ব্রিজ, রাস্তাগুলোকে আরও টেকসইভাবে নির্মাণ করার জন্য নতুন বেশ কয়েকটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এসব প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করতে আগ্রহী হয়েছে।’ এছাড়া গ্রামের সব জায়গায় নিরাপদ স্যানিটেশন ও সুপেয় পানি পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রেও সহযোগিতার জন্য প্রতিনিধিদলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সাক্ষাৎকালে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এবং এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ মহসিন উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম