Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৭৪’র দুঃশাসনের কারণে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল: জাফরুল্লাহ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১২ মার্চ ২০২২ ২২:৫৭ | আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২২ ১০:০৭

ঢাকা: স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের জীবনযাত্রার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘১৯৭৪ সালে দুঃশাসনের কারণে বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। অমর্ত্য সেন তার বইয়ে লিখেছেন, সেই বছর সবচেয়ে বেশি খাদ্য উৎপাদন হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভিক্ষ হওয়ায় সেখানে তিন লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। সেই দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি আবারও শোনা যাচ্ছে। অনাহারে মারা যাচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু অর্ধ আহার ও অপুষ্টিতে আছে।’

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১২ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রয়াত রাজনীতিবিদ মওদুদ আহমদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তারা এ সব কথা বলেন।

মওদুদ আহমদকে স্মরণ জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন আমি আগরতলায় ফিরে আসতাম তখন তাজউদ্দীন ভাই সব সময় বলতেন, জাফরুল্লাহ আমি জানি আলজেরিয়ার ইতিহাস, এ দেশ যখন স্বাধীন হবে তখন হয়ত আমি থাকব না। এটিই হলো জাতির দুর্ভাগ্য। যারা জাতিকে দেওয়ার চেষ্টা করে তারা সব সময় স্মরণযোগ্য হয় না। সেই একই অবস্থা হয়েছে আইনজীবী আমিনুল ইসলাম, মওদুদ আহমদের এবং আমাদের প্রবাসী সরকার তাজউদ্দিন আহমেদের ক্ষেত্রে। আমাদের তাদের মনে রাখা উচিত।’

তিনি বলেন, ‘এই সরকার কারও অবদান মূল্যায়ন করে না। কাউকে মর্যাদা দিতে রাজি হয় না। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার ও ভাষা আন্দোলনের সমস্ত ইতিহাস একটি পরিবারের কাছে বিলীন করা হচ্ছে।’

শনিবার (১২ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রয়াত রাজনীতিবিদ মওদুদ আহমদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

মওদুদ আহমদকে স্মরণ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন আমি আগরতলায় ফিরে আসতাম তখন তাজউদ্দীন ভাই সবসময় বলতেন, জাফরুল্লাহ আমি জানি আলজেরিয়ার ইতিহাস, এ দেশ যখন স্বাধীন হবে তখন হয়ত আমি থাকবো না। এটিই হলো জাতির দুর্ভাগ্য। যারা জাতিকে দেওয়ার চেষ্টা করে তারা সব সময় স্মরণযোগ্য হয় না। সেই একই অবস্থা হয়েছে আইনজীবী আমিনুল ইসলাম, মওদুদ আহমদের এবং আমাদের প্রবাসী সরকার তাজউদ্দিন আহমেদের ক্ষেত্রে। আমাদের তাদের মনে রাখা উচিত।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ইংল্যান্ডে। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে যারা ইংল্যান্ডে যেতে তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা নিয়ে সেখানে তিনি আন্দোলন করছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যারিস্টার মওদুদ এবং আমিনুল ইসলাম প্রবাসী সরকারকে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন।’

মওদুদ আহমদকে স্মরণ করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘আমরা দুজন দুই দল করতাম। কিন্তু সম্পর্ক ছিলো আন্তরিক ও পারিবারিক। মওদুদ আহমদ ৫২ সালে ঢাকা কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। ছাত্র রাজনীতি করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এখন কেউ কেউ অস্বীকার করতে চাইছে। ৭৪ সালের জরুরি অবস্থার সময়ে গ্রেফতার হয়েছেন। এরশাদের আমলে কারাগারে ছিলেন, বিএনপির আমলেও গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি কারাবাস নিয়ে বই লিখেছেন।’

তিনি বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিষয়ে তিনি একজন দক্ষ মানুষ ছিলেন। আমরা তাকে সম্মান দিতে পারিনি। বর্তমান তাকে অসম্মান করেছেন। এই সরকার কারও অবদান মূল্যায়ন করে না। কেউরে মর্যাদা দিতে রাজি নয়। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ও ভাষা আন্দোলনের সমস্ত ইতিহাস একটি পরিবারের কাছে বিলীন করা হচ্ছে। কারও একক অবদানে বাংলাদেশ স্বাধীন হয় নাই।

বিচারপতি আবদুল মতিন বলেন, ‘মওদুদ আহমেদ একজন রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, লেখক। তার মধ্যে আরও অনেক গুণাবলি ছিল। আমি মনে করি ওনাকে আইনজীবীরা চিরদিন কৃতজ্ঞতা ভরে স্মরণ করবে। আইন অঙ্গনে উনি এমন এক সময়ে এসেছিলেন, তখন এই পেশাটা খুবই কঠিন ছিল। মওদুদ সাহেবকে যারা জেনেছেন। তিনি ৪০ বছর একটি বাড়িতে ছিলেন। সেখান থেকে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া, তাকে পলিটিক্যাল কারণে জেলে দেওয়া অথবা বারবার জেলে দেওয়া; এসব ব্যক্তিগত বিষয়ে হয়তো তার দুঃখ ছিল। কিন্তু তিনি সহ্য করতে পারবেন বলেই তাকে হয়তো এ সব দেওয়া হলো। তারপরও উনি যা দিয়ে গেলেন তা আমাদের অনেক বড় পাওয়া। আমরা তাকে স্মরণ করব, তার জন্য দোয়া করব।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘প্রায়ই দেখি বড় বড় দলের নেতারা তাদের নেতাদের নেতৃত্বে ওপর সন্তুষ্ট না। তারা যখন এমনি বলে, তখন তারা বলে ১৩ বছর ধরে একটি সরকার ক্ষমতায় আছে। তারা (অন্যান্য দল) কী করেছে? কিন্তু সেই নেতা যখন মঞ্চে উঠে তখন তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কোনো কথা বলে না। একটা দেশ এরকম করে গড়ে উঠতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘একবার ভাবেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে উদ্যোগ নিয়েছিল সেটা যদি সেই দেশের সেনাবাহিনী, প্রধান বুদ্ধিজীবীরা সমর্থন দিত তাহলে আমেরিকান ডেমোক্রেসির কী অবস্থা হতো? কিন্তু সে দেশের সেনাপ্রধান সেটি করেনি। আর আমার দেশের সেনাপ্রধান, আমি শুধু বর্তমান সেনা প্রধানের উদ্দেশ্যেই বলছি না। সে রকমটা পারবে না। পুলিশ প্রধান বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতা বলেন আর বুদ্ধিজীবী বলেন প্রত্যেকেই নিজের বিশ্বাস গিলে ফেলে তার পরে কথা বলছি যাতে আমার নেতা সন্তুষ্ট হন।’

মওদুদ আহমেদের স্ত্রী হাসনা মওদুদ বলেন, ‘মওদুদ আহমেদের শূন্যস্থান শূন্য হতে দেব না। আমি ওনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব। আমি আমার নোয়াখালী ৫ আসনের গরিব মানুষের পাশে থাকব। আমি চেষ্টা করব মওদুদ আহমদ যেভাবে গণতন্ত্র রক্ষায় এবং মানুষের অধিকার রক্ষা করার জন্য যেভাবে কাজ করে গেছেন, আমি সে রকমভাবেই এলাকার সেবা করে যাব।’

মওদুদ আহমদ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আমিরুল ইসলাম, অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বিএনপি নেতা জয়নুল আবেদীন ফারুক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ।

সারাবাংলা/কেআইএফ/একে

১৯৭৪ সাল জাফরুল্লাহ চৌধুরী টপ নিউজ দুঃশাসন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর