Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ষাটগম্বুজ মসজিদে বাড়ছে দেশি-বিদেশি পর্যটক

জামাল হোসেন বাপ্পা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১১ মার্চ ২০২২ ০৬:৫২

বাগেরহাট: শীত মৌসুম যাই যাই হলেও বিশ্ব ঐতিহ্য বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ ও সুন্দরবনে পর্যটকদের আগমন বেড়েছে। মুসলিম স্থাপত্যের এই অনন্য নিদর্শন দেখতে প্রতিদিনই অসংখ্য দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী আসছেন বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ প্রাঙ্গণে। অন্যান্য দিনের থেকে ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের সংখ্যা থাকে অনেক বেশি ।

প্রায় সাড়ে ৬শ বছর আগে নির্মিত মসজিদ, মসজিদ চত্বরে থাকা যাদুঘর, বিভিন্ন রাইডস, প্রশস্ত সড়ক, নানা জাতের ফুল এবং মসজিদের পশ্চিম পাশের বিশালাকৃতির ঘোড়াদিঘি দেখে মুগ্ধ হন দর্শনার্থীরা। তবে সংখ্যা বেশি হওয়ায় দর্শনার্থীদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর ও ট্যুরিস্ট পুলিশদের।

বিজ্ঞাপন

প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ বছর ১৯ আগস্ট থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮০ জন বিদেশিসহ এক লাখ ১০ হাজার ৫৩০ জন দর্শনার্থী ষাটগম্বুজ ভ্রমণ করেছেন। এর মাধ্যমে ১৯ লাখ ৫২ হাজার ৬০৫ টাকা রাজস্ব আয় করেছে সরকার। বিপুল পরিমাণ এই দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ও সার্বিক সহযোগিতায় প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের পাশাপাশি ট্যুরিস্ট পুলিশও দায়িত্ব পালন করছেন।

 

অপরদিকে, মোংলা ও সুন্দরবনের অভ্যন্তরে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতেও কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। ট্যুরিস্ট লঞ্চের পাসপারমিট চেক, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত, নির্ধারিত ভাড়া গ্রহণ, নদীপথে আকস্মিক বিপদ-আপদে দর্শনার্থীদের পাশে থাকেন ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। মোংলা ও সুন্দরবন সংলগ্ন পর্যটন স্পটে আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে কাজ করে ট্যুরিস্ট পুলিশের মোংলা জোন। এই জোনের অধীনে সুন্দরবনের করমজল মোংলাসহ কয়েকটি স্থাপনা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ট্যুরিস্ট পুলিশের খুলনা জোনের পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহমেদ বলেন, বাগেরহাটের দর্শনীয় স্থানগুলোতে দর্শনার্থীরা যাতে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারেন, সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কেউ যাতে কোনো রকম হেনস্থা বা হয়রানির শিকার না হন, সেজন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

হাফেজ আব্দুল হাদি খান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, ষাটগম্বুজ মসজিদে আসলে বোঝা যায়, জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মুসলিমদের কতটুকু দখল ছিল। সে আমলে ষাটগম্বুজ মসজিদের স্থাপত্য শৈলী যে কত উঁচু মানের, তা অভিজ্ঞ স্থাপত্যবিদ ছাড়া বোঝার উপায় নেই। আমরা চাই যুগযুগ ধরে টিকে থাকুক মুসলিম ঐতিহ্যের ধারক-বাহক এই ষাটগম্বুজ মসজিদ।

শিক্ষা সফরে আসা শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, ষাটগম্বুজ মসজিদ কমপ্লেক্সের মধ্যেই রয়েছে বাগেরহাট যাদুঘর। তাই এখানে আসলে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখার পাশাপাশি বাগেরহাটের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কেও জানা যায়। বাগেরহাট যাদুঘর ঘুরে খানজাহান আমলের কুমিরের চামড়া দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। সুযোগ পেলে আবারও আসতে চাই ষাটগম্বুজে।

শিক্ষা সফরে আসা নাজমুল আহসান নামে অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, বইয়ে ষাটগম্বুজ সম্পর্কে পড়েছি। টাকাতে এই মসজিদের ছবিও দেখেছি। এখন সরাসরি দেখে খুব ভালো লাগছে।

ফরিদপুর থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে আসা ব্যবসায়ী আকমল হোসেন বলেন, ষাটগম্বুজের আশপাশে উন্নতমানের কোনো আবাসিক হোটেল-মোটেল নেই। ভালোমানের খাবার হোটেলও নেই এখানে। সুপেয় পানিরও সংকট রয়েছে কমপ্লেক্সের মধ্যে। এসব সংকট সমাধান করতে পারলে আরও স্বাচ্ছন্দ্যে বেড়ান যেত ষাটগম্বুজে।

বাগেরহাট জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মো. যায়েদ বলেন, ষাটগম্বুজ মসজিদ একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্থাপনা। এই স্থাপনার প্রতি দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী ও গবেষকদের আগ্রহের কমতি নেই। যার ফলে প্রতিনিয়ত এখানে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের জনবল অনেক কম। ফলে দর্শনার্থীদের চাপ সামলাতে আমাদের কিছুটা হিমশিম খেতে হয়। তারপরেও দর্শনার্থীদের সব ধরণের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে সব সময় চেষ্টা করি।

সারাবাংলা/আইই

ষাটগম্বুজ মসজিদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর