Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চমেক হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহ-বণ্টনে গরমিল পেয়েছে দুদক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১০ মার্চ ২০২২ ১৮:২৫ | আপডেট: ১০ মার্চ ২০২২ ২১:২০

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টোর থেকে ফার্মেসিতে ওষুধ সরবরাহ এবং সেগুলো রোগীদের মাঝে বণ্টনের ক্ষেত্রে গরমিল পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। হাসপাতালে প্রায় চার ঘণ্টা অভিযানের পর দুদক কর্মকর্তারা বলেছেন, যত রোগীকে বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি ওষুধ স্টোর থেকে ফার্মেসিতে নেওয়া হচ্ছে।

দুদকের হটলাইনে এক ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) সকাল ১১টা বিকেল তিনটা পর্যন্ত চমেক হাসপাতালে অভিযান চালান সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

বিজ্ঞাপন

এ সময় দুদক কর্মকর্তারা চমেকের স্টোর ও ফার্মেসিতে ওষুধ সরবরাহের নথিপত্র যাচাইয়ের পাশাপাশি অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে গিয়ে রোগীদের সঙ্গেও কথা বলেন।

অভিযান শেষে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াত বলেন, ‘রোগীদের সরবরাহের জন্য ওষুধ কিনে হাসপাতালের স্টোরে রাখা হয়। সেখান থেকে ফার্মেসিতে নেওয়া হয়। এরপর ওয়ার্ডে রোগীদের জন্য সরবরাহ করা হয়। আমরা ফার্মেসি আর অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে গিয়েছিলাম। আমরা ওষুধ সরবরাহ ও বন্টনের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রারে কিছু গরমিল পেয়েছি। সেগুলো আমরা আরও যাচাই-বাছাই করব। এরপর কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দেব। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, সেভাবে পরবর্তী কার্যক্রম চলবে।’

কী ধরনের গরমিল পাওয়া গেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্টোরে স্টক থেকে ফার্মেসি ওষুধ নেয়। সেই ওষুধ নেওয়া এবং পরবর্তীতে রোগীদের মাঝে বণ্টন- এই হিসাবটা আমরা সন্তোষজনকভাবে পাইনি। ধরেন, প্রতিদিন ১০০ রোগীর জন্য চাহিদা দেওয়া হচ্ছে, অথচ রোগী এর চেয়ে ৩০ জন কম বা বেশি। তাহলে কম হলে বাকি ওষুধের হিসাব বা বেশি হলে কিভাবে বণ্টন হচ্ছে- সেই হিসাবটা তারা ক্লিয়ার দিতে পারেনি। যতজনকে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে, তার চেয়ে অনেক বেশি ওষুধ স্টোর থেকে নিয়ে আসছে। সেই হিসাবে গরমিল পেয়েছি।’

বিজ্ঞাপন

নাজমুচ্ছায়াত আরও জানান, গরমিলের বিষয়ে স্টোর ও ফার্মেসির সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা জবাব দিয়েছেন, লোকবল স্বল্পতার কারণে তারা হিসাবটা আপডেট রাখতে পারেন না। তবে বরাদ্দ ও বণ্টনের ক্ষেত্রে কোনো গরমিল নেই বলে তাদের দাবি।

অর্থোপেডিক ওয়ার্ডের রোগীরা সরকারিভাবে যেসব ওষুধ বরাদ্দ আছে সেগুলো পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয়ের অভিযোগ করেননি বলে তিনি জানান। তবে কয়েকটি ওষুধের নাম দিয়ে সেগুলো তাদের না দেওয়ার অভিযোগ করেন। এক্ষেত্রে স্টোর ও ফার্মেসি সংশ্লিষ্টরা দুদককে জানান যে, এসব ওষুধের সরকারি বরাদ্দ নেই।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওষুধ স্টোর শাখার ইনচার্জ ডা. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘নিয়মিত চাহিদাপত্র জমা দিয়ে স্টোর থেকে ফার্মেসিতে ওষুধ আনা হয়। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, রোগী বেশি হয়ে গেছে। তখন স্টোর থেকে আবারও এনে ওষুধ দেওয়া হয়। পরদিন সমপরিমাণ ওষুধ কম দিয়ে হিসাব ঠিক রাখা হয়। এটি আরও স্বচ্ছ করার জন্য দুদকের কর্মকর্তারা বলেছেন। ওষুধ চুরি ঠেকাতে আমরা নতুন নিয়ম করেছি। এখন ওয়ার্ডের ইনচার্জদের সরাসরি এসে তাদের চাহিদামতো ওষুধ নিয়ে যেতে হয়। স্টোর থেকে সরাসরি ওষুধ সরবরাহ করা হয় না।’

এর আগে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি সরকারিভাবে বরাদ্দ বিনামূল্যের বিপুল পরিমাণ ওষুধসহ চমেক হাসপাতালের দুই কর্মচারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সারাবাংলা/আরডি/একে

চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম মেডিকেল টপ নিউজ দুদক দুর্নীতি দমন কমিশন

বিজ্ঞাপন

দেশপ্রেম ও মেধা পাচার
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৪৪

আরো

সম্পর্কিত খবর