৩ কোটি টাকার বন্ধকী সম্পত্তি বিক্রি করে লাপাত্তা
৯ মার্চ ২০২২ ১৯:০৮ | আপডেট: ৯ মার্চ ২০২২ ২০:২৮
ঢাকা: সোনালী ব্যাংকের কাছে বন্ধকী সম্পত্তি বিক্রি করে লা পাত্তা আল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী। ৫ বছর ৩ মাসের কারাদণ্ড নিয়ে আল ইসলাম এখন ফেরারি। কেউ বলছে বিদেশে চলে গেছে, কেউ বলছে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ঋণ খেলাপী হওয়ার পরে কয়েক দফা মুচলেকা দেয় ঋণের টাকা পরিশোধের কিন্তু কৌশল করে সে বন্ধকি সম্পত্তি গোপনে বিক্রি করে দিয়েছেন। দুই প্রতিষ্ঠানের নামে ভিন্ন দলিল বন্ধক রেখে ঋণ গ্রহণ করেন আল ইসলাম।
আদালত অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করে অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। এদিকে পেনাল কোড অপর একটি মামলা দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে আরও দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
দুই মামলায় মোট ৫ বছর ৩ মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন আল ইসলাম। এদিকে তার বিরুদ্ধে সদর থানায় ধারা ৪০৬, ৪২০, ৪১৮ দণ্ডবিধি ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল মামলা হয় যার নং ৫১ (১১) ১৩।
মুন্সীগঞ্জ পৌরসভাধীন চরশিলমন্দি এলাকার অধিবাসী মরহুম মো. দুলু মিয়া শেখের ছেলে মো. আল ইসলাম (৫৪)। আল ইসলাম ট্রেডার্স ও ফাতেমা ইলেকট্রনিক্স ফার্মের নামে দুটি ঋণ নেয় সোনালি ব্যাংক মুন্সীগঞ্জ করপোরেট শাখা থেকে। আল ইসলাম ট্রেডার্সের নামে ১ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ৫শ ৯২ টাকা, অপরদিকে ফাতেমা ইলেক্ট্রনিক্সের নামে ২ কোটি ৭৭ লাখ ৪৬ হাজার ২শত ৭৪ টাকা হয়েছে সুদ আসল মিলে। ২০১২ সালের ২৩ মে জমি বন্ধক দিয়ে ঋণ নেয় আল ইসলাম।
মামলার এজহার থেকে জানা যায়— প্রথমে আল ইসলামে ট্রেডার্সের নামে ২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি এসএমইসিসি হাইপো অ্যাকাউন্ট ওপেন করে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। পরবর্তী সময়ে ২০১২ সালের এপ্রিল মাসের ২ তারিখ বর্ধিত করে সেই ঋণ করে ১ কোটি। সে আবার ফাতেমা ইলেকট্রনিক্স ফার্মের নামে ঋণ নেন। দুই ফার্মের মোট ঋণের পরিমাণ এখন ৪ কোটি ৭ লাখ ৩৭ হাজার ৮৬৬ টাকা। ঋণ নেওয়ার পর ১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে ঋণ খেলাপি হয় আল ইসলাম। কিন্তু সে একাধিকবার ঋণ পরিশোধের অঙ্গীকার করে কৌশলগত কারণে ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে অঙ্গীকার ভঙ্গ করে।
২৬ শতাংশ জায়গার মধ্যে ১৫.৩৪ শতাংশ বিক্রি করে দেয়। পরবর্তীতে সোনালী ব্যাংক মুন্সীগঞ্জ করপোরেট গ্রেড ২ শাখার এজিএম মো. শহীদুজ্জামান বাদী হয়ে মো. আ. বারেক, মাহবুবুর রহমান, গোলাম মোস্তফা, নিহার রঞ্জন সাহা ও আফজাল হোসেনকে স্বাক্ষী করে আল ইসলামের নামে মামলা করেন মামলা নং ৫১ (১১) এবং সিআর মামলা করা হয় নং ৩২৯/২০১৩। ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বরের অভিযোগ দায়ের করা হয়। ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিলের রায় ঘোষণা করা হয়।
সোনালী ব্যাংক মুন্সীগঞ্জ করপোরেট গ্রেড-২ শাখার এ জি এম নুরউদ্দিন জানান, আল ইসলামের ৯৯ শতাংশ জায়গার দলিল বন্ধক রেখে দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ গ্রহণ করেন। কিন্তু ঋণের টাকা না দিয়ে ব্যাংকের কাছে বন্ধকী সম্পত্তি বিক্রি করে সে এখন লাপাত্তা। ঋণের টাকা ওঠানো এবং বন্ধকি সম্পত্তি বিক্রি করার অপরাধ করায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দুটি ধারাই আল ইসলামের সাজা হয়েছে। দ্রুত আমরা আমাদের বন্ধকী সম্পত্তি উদ্ধার করতে পারব বলে আশা করছি।
সারাবাংলা/একে