ইউক্রেনে হামলার শিকার জাহাজের ২৮ নাবিককে নেওয়া হলো বাংকারে
৩ মার্চ ২০২২ ২১:১২ | আপডেট: ৩ মার্চ ২০২২ ২২:১০
চট্টগ্রাম ব্যুরো : রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেনে রকেট হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি জাহাজের ২৮ নাবিককে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের আপাতত সেখানে বাংকারে রাখা হচ্ছে বলে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের নির্বাহী পরিচালক পীযূষ দত্ত সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নাবিকদের জাহাজ থেকে নামানো শুরু হয়। এর আগে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা খবর পেয়েছি, রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ সব নাবিককে নামিয়ে তীরের কাছাকাছি বাংকারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইউক্রেনের সংশ্লিষ্ট বন্দর কর্তৃপক্ষই তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সার্বিক তত্ত্বাবধান করছে।’
এদিকে, বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) রাতে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা থেকে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, উদ্ধার জাহাজ নাবিকদের তীরে আনা হচ্ছে। আমরা নাবিকদের দ্রুত নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। যে নাবিক ওখানে মারা গেছেন, তার মরদেহ ফিরিয়ে আনার বিষয়েও আলোচনা করেছি।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, প্রথম পদক্ষেপের অংশ হিসেবে আমরা নাবিকদের ইউক্রেনের মূল ভূখণ্ডে নিয়ে যাব। এরপর পোল্যান্ডের সীমান্তে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করব। নাবিকদের সরিয়ে নিতে রাশিয়াও সব ধরনের সহায়তা করবে।
জাহাজটি আপাতত অলভিয়া বন্দর থেকে সরানো সম্ভব নয় জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, জাহাজটি এখনই সরানো যাবে না। কারণ সেখানে অনেক মাইন পাতা আছে।
আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে মস্কো, ওয়ারশ, বুখারেস্ট ও ভিয়েনার রাষ্ট্রদূত, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, এএফডি, পেট্রোবাংলা, ব্যবসায়িক নেতা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার (২ মার্চ) ইউক্রেনের স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটার কিছু পরে বাংলাদেশি ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে বিমান হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় রুশ বাহিনীর এই হামলায় মো. হাদিসুর রহমান নামে এক নাবিকের মৃত্যু হয়। তিনি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তার বাড়ি বরগুনা জেলা বেতাগীতে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, জাহাজের জীবিত ২৮ নাবিকের সঙ্গে হাদিসুরের মরদেহও বাংকারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে নোঙ্গর করে। পরদিনই রাশিয়ার হামলা শুরু হয়। জাহাজটি সেখানে গত আটদিন ধরে আটকে আছে।
আরও পড়ুন-
- লাশ ফেরত পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় হাদিসের পরিবার
- ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে হামলা, প্রকৌশলী নিহত
- বাড়ি ফিরে বিয়ে করার কথা ছিল হাদিসের, চলছিল প্রস্তুতি
- ইউক্রেনে আটকা জাহাজের নাবিকদের উদ্ধারের আকুতি
- ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে হামলা, জানে না পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
সারাবাংলা/আরডি/টিএস/একে