‘বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চায় যুক্তরাজ্য’

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে একটি ‘বিশ্বাসযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচন চায় বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন। অন্যদিকে, রাশিয়া-ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন ব্রিটিশ এই কূটনীতিক।

সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য যান। মেয়রের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।

এ সময় বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র। নির্বাচনে আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করতে চাই না। বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশে মুক্ত ও অবাধ নির্বাচন আমরা প্রত্যাশা করি। বাংলাদেশ নিজে একটি ভালো নির্বাচন আয়োজনে অধিকতর যোগ্য। বন্ধু হিসেবে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও মুক্ত নির্বাচন চাই।’

ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার বেআইনি আগ্রাসন। এটি অত্যন্ত ভয়াবহ অপরাধ। অবিলম্বে এই আগ্রাসন বন্ধ করা উচিত। কোনো অজুহাত না দেখিয়ে রাশিয়ার সৈন্য প্রত্যাহার করা উচিত। তবে আশাবাদের কথা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রাশিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা দিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, যাতে সম্পূর্ণ বেআইনি আগ্রাসনের একটা অর্থনৈতিক মূল্য তাদের চুকাতে হয়।’

‘অবশ্যই এ পরিস্থিতি বৈশ্বিক অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে সকল দিক থেকে। সম্পূর্ণ পূর্বানুমান আমরা করতে পারি না। যখন একটি যুদ্ধ চলমান তখন এর বিঘ্নকারী প্রভাব অবশ্যই পড়বে। আমরা হয়তো ধারণা করতে পারি, জ্বালানি মূল্য ও ভোগ্যপণ্যের দামে প্রভাব পড়বে। অর্থনীতিতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের নতুন প্রোগ্রাম আছে। কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য জলবায়ু অংশীদারিত্ব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আলোচনা করেছেন। বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের মধ্যে এই জলবায়ু অংশীদারিত্ব হবে একটি বৃহৎ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা প্রকল্প।’

এর আগে, সকালে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত নগরীর বিজয়নগর ও কর্ণফুলী নদীর তীরে মোহরা জেলে পাড়া এলাকায় ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন (এলআইউপিসি) প্রকল্প’ পরিদর্শন করেন। তিনি সেখানে বাংলাদেশ সরকার, ব্রিটিশ সরকার ও ইউএনডিপির সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জলবায়ূ সহনশীল বিভিন্ন অবকাঠামো ঘুরে দেখেন।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেন, ‘জলবায়ু সহিষ্ণু জীবনমান উন্নয়নে আমরা কাজ করছি। সেখানে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে শিক্ষা, অবকাঠামো, ক্ষুদ্র ঋণ, আবাসন নিয়ে কাজ করছি আমরা। এতে নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে। নারী ও শিশুরা সহায়তা পাচ্ছে। একসঙ্গে নিজেরা মিলে নিজেদের সমস্যার সমাধান করছে। এতে অল্প সুযোগে তারা কার্যকর উদ্যোগে দক্ষ হয়ে উঠছে। যা আমাকে মুগ্ধ করেছে।’

যুক্তরাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘এই প্রকল্পে সাধারণ মানুষ সন্তুষ্ট। বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের বন্ধুত্ব অতীতে ছিল, বর্তমানে আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। এ ধরনের প্রকল্প অব্যাহত থাকলে আমাদের জনগণের জীবনমান উন্নত হবে।’

এ সময় ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি, জাতীয় প্রকল্প পরিচালক (এলআইউপিসি) যুগ্ম সচিব মো. মাসুম পাটোয়ারী উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

টপ নিউজ ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত যুক্তরাজ্য