Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুষ্ঠু নির্বাচনে সব দলের সহযোগিতা প্রয়োজন: সিইসি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:৪১ | আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:৪৫

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। ফাইল ছবি

ঢাকা: অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এক্ষেত্রে সব দায় শুধু নির্বাচন কমিশনের নয় বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর গতকাল শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে নিজ বাসভবনে তৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমার সবার প্রতি সমান দৃষ্টি থাকবে। সবার সঙ্গে সমান আচরণ নিশ্চিত করার চেষ্টা করব। তবে জোর দিয়ে বলতে চাই- সব দোষ নির্বাচন কমিশনকে দিলে আমি তা গ্রহণ করব না। রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা আছে। পুলিশ, আনসার, র‌্যাবকে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমি তাদের কমান্ড করব না। আমি এসপিকে বদলি করতে পারব না। আমি কমান্ড করলে কেউ রাইফেল নিয়ে দৌড়াবেও না।’

তিনি বলেন, ‘সব দলের প্রতি সমান আচরণ নিশ্চিত করতে কাজ করব। তবে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব দায় শুধু নির্বাচন কমিশনের নয়। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন।’

অতীতের দুটি নির্বাচনে কমিশন ইমেজ সংকট রয়েছে- এমন প্রশ্রের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইমেজ সংকট আমাকে নিয়েও হতে পারে। আমি রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা না পেলে এবং নির্বাচনী পরিবেশ অনুকূল না হলে আপনারা আমাকেও দায়ী করবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের চেয়ে অনেক বড় দায়িত্ব হচ্ছে রাজনৈতিক নেতৃত্বের। তারা যদি মনে করেন, নির্বাচন কমিশন সুন্দর নির্বাচন করিয়ে দেবে, তাহলে ভুল ধারণা হবে। তাদের সক্রিয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। তারা আমার কাছে সহযোগিতা চান, আমিও তাদের সহযোগিতা চাই। এটা যদি নিউজিল্যান্ড হতো, তাহলে চা খেতে নির্বাচনে হয়ে যাবে। কিন্তু বাংলাদেশ-ভারতে সেটা হবে না। এখানে পরিবেশ স্টেবল হয়ে ওঠেনি এখনো।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপির বক্তব্য শুনে একটু হতাশ হচ্ছি, ওনারা নির্বাচন করবেন না। আমি বলব, নির্বাচনে আসেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। আপনি যদি মাঠ ছেড়ে দেন, তাহলে নির্বাচন অবাধ’ই হবে। কোনো বাধা থাকবে না। মাঠে যদি থাকেন, তাহলে নির্বাচন বাধা-বিপত্তির মধ্যে সবার অংশগ্রহণটা হবে।’

তিনি বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আমাদের তৈরি করতে হবে। এটাও আমি বলব, নির্বাচন কমিশনের পক্ষে তা করা কতটা সম্ভব হবে? এজন্য পক্ষ-প্রতিপক্ষ শক্তিকে কাছাকাছি শক্তির হতে হয়। যারা বিরোধীপক্ষে থাকবেন, তাদের আরও সক্রিয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। তাহলে মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ আপেক্ষিকভাবে ভালো হবে।’

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচনে কারচুপি চিরকালই হয়েছে কম-বেশি। এ জিনিসটা যাতে কম হয়, মানুষের যাতে স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকে, সেটা যদি আপেক্ষিকভাবে, ভালোভাবে নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে সফলতা। কিন্তু আমি এখনো বিশ্বাস করি না সবাই স্বতস্ফূর্তভাবে আসবেন বা আসতে পারবেন। অতীতে ১০০-২০০ বছরের নির্বাচনেও সেটা দেখা যায়নি। কিন্তু নির্বাচনে যখন সবাই আনন্দের সঙ্গে অংশগ্রহণ করে, কিছু এদিক-সেদিক হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘অনেকে বলেন, সরকারি দল চাপ প্রয়োগ করেন- এটা ঠিক নয়। যারা সরকারি দলে থাকেন, তাদের কিছু বাড়তি সুবিধা থাকে। যদি জাতীয় পার্টি থাকত, বিএনপি থাকত, তারাও পেত। এটাকে নেগেটিভ ভাবে নিলে হবে না।’

নতুন সিইসি আরও বলেন, ‘আমি সিইসি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে বসব। তারপর দায়িত্ব নিয়ে আরও বেশি ঋদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করব। আশা করি, সবাই সহযোগিতা করবেন। সবার বক্তব্য শুনে আন্তরিক মনে হয়েছে। সবাই সুন্দর নির্বাচন চাইছেন। নির্বাচন কমিশন একা নির্বাচন করে না। অনেক স্টেক হোল্ডার থাকে। নির্বাচন কমিশন টপ লেভেলে থেকে পলিসিগুলো বলে দেয়। সব সেন্টারে নির্বাচন কমিশন থাকে না। প্রশাসনকে কতটা নিরপেক্ষ করা যায়, দায়িত্বশীল করা যায়- সেটাও কিন্তু বড় চ্যালেঞ্জ।’

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে নতুন ইসির কাজ কী হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা এখনই বলতে পারব না। তবে এটা সজহ কাজ নয়। সমন্বিতভাবে সবাই মিলে কাজ করব। আমার কাছে লাঠি নেই, বন্দুক নেই। খালি হাতে যুদ্ধ করতে হবে। আমাদের অস্ত্র আপিল। সবাই যদি দায়িত্ববোধের সঙ্গে কাজ করেন, তাহলে সুশাসনের দিকে অগ্রসর হবে। নির্বাচন নিয়েই মাথা ঘামাব। রাজনৈতিক দিকে নয়। কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইলে রাজনৈতিকভাবে যেতে যাবে। যা নির্বাচন কমিশনের কাজ নয়।’

আস্থার পরিবেশ তৈরিতে নির্বাচন কমিশনেক মুখ্য ভূমিকা আছে, সেখানে ভূমিকা কি থাকবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না সব আমার দায়িত্ব। এখানে অন্যদের ভূমিকা আছে। গণমাধ্যমের ভূমিকা আছে। আমি যদি ভুল করি, সমালোচনা করবেন। ধরিয়ে দেবেন।’

সারাবাংলা/জিএস/এনএস

কাজী হাবিবুল আউয়াল টপ নিউজ প্রধান নির্বাচন কমিশন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর