‘রিজার্ভ-মাথাপিছু আয় সম্পর্কে সরকার মিথ্যা পরিসংখ্যান দিচ্ছে’
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:৪৫ | আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০১:১৩
ঢাকা: দেশে বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ (রিজার্ভ) ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি সম্পর্কে সরকার জনগণকে মিথ্যা পরিসংখ্যান দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সদস্য ফরম বিতরণ উদ্বোধনকালে তিনি এই অভিযোগ করেন। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকে যারা দেশ শাসন করছে তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) পুরো ফেইক, প্রতারক। তারা রিজার্ভের যে ৪৬ বিলিয়ন ডলারের কথা বলছে। আইএমএফ বলছে, আসলে এটা ফিফটিন পারসেন্ট বাড়িয়ে বলা হয়েছে। এটা একটা ভুয়া সংখ্যা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ তার চেয়ে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার কম। এটা পরীক্ষিত একটা ব্যাপার।’
‘তারা মাথাপিছু আয় বাড়ার কথা বলছে। তাই যদি হবে আমার শফিউদ্দিন ভাই আত্মহত্যা করলেন কেন? আজকে তিনি সেচের ব্যবস্থা পাননি। এভাবে আপনি যদি লক্ষ্য করে দেখেন প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকার মিথ্যাচার করছে’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘তারা (সরকার) কথায় কথায় উৎপাদনের কথা বলছে, উন্নয়নের কথা বলছে। এমন মনে হয় যেন, উন্নয়নের দাপটে সব কিছু তারা সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিচ্ছে। অথচ গতকালই আমরা দেখেছি যে, কৃষিখাতে শস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে এখনো ৬৭ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য আমদানি করতে হচ্ছে। খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা লাভের যে দাবি তারা করে তা ভাওতাবাজী ছাড়া আর কিছু নয়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের চরিত্রটাই এটা। মিথ্যা কথা বলে, প্রতারণা করে, জনগণকে বিভ্রান্ত করে তারা একটা চমক সৃষ্টি করে এগিয়ে যেতে চায়। পুরো জিনিসটা প্রতারণা।’
তিনি বলেন, ‘কৃষক ভাইদের সরকার চরম বিপাকের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তারা বলেছিল যে, আমরা ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াব। তারা কি খাইয়েছে? এখন কত? ৬০/৭০ টাকা। কৃষকভাইদের বলেছিল যে, আমরা বিনা পয়সায় সার দেব। বিনা পয়সায় কি সার দিয়েছে? এখন তিন/চার গুণ বেশি সারের দাম। ঘরে ঘরে চাকরি দেবে তারা বলেছিল। সেই চাকরি তো সাধারণ মানুষ পায়ই না। যারা চাকরি পায় তাদের ২০/২৫ লাখ পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়।’
কৃষক দলের নতুন কমিটির নেতৃত্বে কৃষকদের সংগঠিত করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় অংশ হচ্ছে কৃষক। তাদের এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার সাহস সঞ্চয় করতে হবে। এটা জরুরি। বাংলাদেশের অতীত ঐতিহ্য আছে, এদেশের কৃষকরা বরাবরই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, তাদের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছে।’
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জনজীবনের দুরাবস্থার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রত্যেকটা জিনিসের দাম ১০/১৫ গুণ বেড়ে গেছে। গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের দাম বেড়ে গেছে। মানুষ এখন বিক্ষুব্ধ, তারা দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে পড়েছে। এই অবস্থা থেকে মানুষ বেরিয়ে আসতে চায়।’
কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কৃষক দলের হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, গৌতম চক্রবর্তী, মোশাররফ হোসেন, ওমর ফারুক শাফিন, ওবায়দুর রহমান টিপু প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম