Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বুস্টার ডোজের পর শতভাগ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:২৩ | আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০০:১৮

ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলছে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম। এই কর্মসূচিতে প্রথম ডোজ, দ্বিতীয় ডোজের পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে বুস্টার ডোজও। ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ নেওয়ার পরে সবার শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যারা আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তাদের শরীরে তুলনামূলক বেশি অ্যান্টিবডি পাওয়া পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে করোনাভাইরাস প্রতিরোধি ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসসহ অন্য রোগের কারণে অ্যান্টিবডি তৈরিতে কোনো পার্থক্য হয় না। প্রায় সবার ক্ষেত্রেই অ্যান্টিবডির মাত্রা একই রকম বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ দেওয়ার পর মানুষের শরীরে পাঁচ গুণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানটির উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে কোভিড-১৯ এবং ভ্যাকসিনের ওপর পরিচালিত ‘করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নেওয়ার পর হেমাটোলোজিক্যাল মানদণ্ড এবং অ্যান্টিবডি টিট্রে পরিস্থিতি’ শীর্ষক ওই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। ভ্যাকসিন গ্রহণকারী ২২৩ জনের ওপর চালানো এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে আসে বলে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য ও গবেষণা দলের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। গবেষণা প্রকল্পটিতে সহ-গবেষক হিসেবে যুক্ত ছিলেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দীন শাহ।

ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, গবেষণায় দুই ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার এক মাস ও ছয় মাস পর এবং বুস্টার ডোজ গ্রহণের এক মাস পর শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে তৈরি অ্যান্টিবডির মাত্রা পরিমাপ করা হয়।

বিএসএমএমইউ’র গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ভ্যাকসিন গ্রহণের ছয় মাস অতিবাহিত হবার পরে দেখা যায়, অধিকাংশের ক্ষেত্রেই অ্যান্টিবডির পরিমাণ কমেছে। তাদের মধ্যে ৩০ জন ভ্যাকসিন গ্রহীতার ক্ষেত্রে দেখা যায়, ৭৩ শতাংশের অ্যান্টিবডির মাত্রা হ্রাস পেয়েছে, গড় অ্যান্টিবডির মাত্রা ৬৭৯২ AU/mL থেকে ৩৯৬৩ AU/mL তে নেমে এসেছে। এ সময় ২ জন ভ্যাকসিন গ্রহীতার দেহে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়নি। তবে বুস্টার ডোজ গ্রহণের পরে শতভাগ অংশগ্রহণকারীদের দেহেই অ্যান্টিবডি পাওয়া যায় এবং প্রায় সকলের ক্ষেত্রেই এই মাত্রা ফের বৃদ্ধি পেয়ে গড়ে ২০৮৭৮ AU/mL-তে এসে দাঁড়ায়।

বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য বলেন, ‘ভ্যাকসিন নেওয়ার পর প্রথম ধাপে ৯৮ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যারা আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাদের শরীরে তুলনামূলক বেশি অ্যান্টিবডি পাওয়া পাওয়া গেছে। তবে ভ্যাকসিন গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অ্যান্টিবডির পরিমাণ কমেছে। কিন্তু বুস্টার ডোজ দেওয়ার পর শতভাগ অংশগ্রহণকারীর শরীরেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। তাছাড়া রক্তের প্যারামিটারগুলোতে কোনো পরিবর্তন হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অর্ধেকের বেশি অংশগ্রহণকারী আগে থেকেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানিসহ অন্যান্য রোগে ভুগছিলেন। তবে এ ধরনের রোগের কারণে অ্যান্টিবডি তৈরিতে কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়নি। ৪২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী ভ্যাকসিন গ্রহণের পরে মৃদু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তবে রক্ত জমাট বাঁধা বা অন্য কোনো জটিল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গবেষণাকালীন দেখা দেয়নি।’

বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, ‘বুস্টার ডোজ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা ও কার্যকারিতা প্রমাণে গবেষণায় উঠে এসেছে, ভবিষ্যতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর বুস্টার ডোজ প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা যাচাইয়ের জন্য সমসাময়িক গবেষণার প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রযোজ্য সকল ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধির যথাযথ অনুসরণ নিশ্চিত করা অপরিহার্য।’

গবেষণায় প্রাপ্ত পূর্ণাঙ্গ ফলাফল জানিয়ে বিএসএমএমইউ’র প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়ার এক মাস পর, দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়ার ছয় মাস পর এবং বুস্টার ডোজ নেওয়ার এক মাস পর শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে তৈরি অ্যান্টিবডির মাত্রা পরিমাপ করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় ২২৩ জন অংশগ্রহণকারীর ক্ষেত্রে দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়ার এক মাস পর এবং তন্মধ্যে ৩০ জনের দুই ডোজ নেওয়ার ছয় মাস পর ও বুস্টার ডোজ নেওয়ার এক মাস পর অ্যান্টিবডির মাত্রা পরিমাপ করা হয়।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

টপ নিউজ বুস্টার ডোজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর