Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা মেডিকেলে আগুন আতঙ্ক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০০:১৪

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আবারও অগুন আতঙ্ক। রোগীদের ছুটাছুটি। তবে এবার শিশু ওয়ার্ডের বারান্দায় মশার কয়েল থেকে আগুনের ঘটনা ঘটে। এ সময় ওয়ার্ডে থাকা স্বজনরা তাদের শিশু রোগদের নিয়ে সেখান থেকে দৌড়ে বেরিয়ে যায়। পরে ওয়ার্ডে থাকা লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলে।

সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ২০৮ নম্বর ওয়াডের বারান্দায় একটি স্টিলের আলমারির ওপরে দুটি কাগজের কার্টনে বোঝাই করা কিছুই মালামালে এই অগ্নিকাণ্ডে ঘটে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়— ওয়ার্ডের বারান্দায় একটি লোহার আলমারি, এবং এলোমেলো অবস্থায় আসবাবপত্রে পড়ে আছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওয়ার্ডে সরকারী ওয়ার্ডবয়ের দায়িত্বে ছিল আক্তার হোসেন। কিন্তু তিনি সে সময় ডিউটিতে ছিল না। শাহিন নামের এক ছেলেকে ওয়ার্ডে তিনি বাইরে ছিলেন।

শাহিনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার বাড়ি কুমিল্লায়। আক্তার তাকে সেখানে কাজ দিয়েছে। ওয়ার্ডের বারান্দায় বিছানা করে থাকে।

জানা যায়, হাসপাতালে ডেইলি বেসিকের মাধ্যমে লোক নিয়োগ করা হয়েছে। কোনো বহিরাগতরা কাজ করতে পারবে না।

এ বিষয়ে ওয়ার্ড মাস্টার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘শাহিন নামে এক ছেলে কাজ করে। সে স্পেশাল হিসেবে আছে। অনেককেই বের করে দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবাইকে বের করে দেওয়া হবে। আর শাহিনকে পুলিশে দেওয়া হবে।’

হাসপাতালের ওয়ার্ডে কুমিল্লা মেঘনা থেকে জ্বর বমিজনিত সমস্যায় শিশু রেশমা (৯) গত কয়েকদিন আগে ওই ওয়ার্ডে ভর্তি করে তার পরিবার। ঘটনার সময় সঙ্গে থাকা শিশুটির মা আফরোজা বলেন, ‘হঠাৎ দেখি ওয়ার্ডের বারান্দায় স্টিলের আলমারির ওপরে কার্টুনের ভেতর থেকে প্রচণ্ড ধোঁয়া বের হচ্ছে। সেই ধোঁয়া ওয়ার্ডের ভিতরে ছেয়ে যায়। পরে আমার সন্তানকে কোলে নিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যাই। পাশাপাশি সবাই তাদের সন্তান নিয়ে থেকে বেরিয়ে যায়। এ সময় সেখানে এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।’

বিজ্ঞাপন

শিশু রোগী বুশরা (৬) তার চাচা সাজিদুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ শুনতে পাই আগুন আগুন। কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। অন্য আত্মীয়র মাধ্যমে বুশরাকে ওয়ার্ড থেকে বের করা হয়। পরে ওয়ার্ডের বারান্দায় গিয়ে দেখা যায় স্টিলের আলমারির ওপরে দুইটি কার্টুনে মালামাল থেকে প্রচণ্ড ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে। পরে আমরা কয়েকজন মিলে সেটা নিভিয়ে ফেলি।’

অগ্নিকাণ্ড সংবাদে অন্যান্যদের পাশাপাশি ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া সেখানে যায়। তিনি জানান, স্টিলের আলমারির ওপরে কাগজের কাটুনের বিভিন্ন মালামাল ছিল। যেমন বেডশিট, পিপিই, কম্বল ও সহ আরো অনেক কিছু। শুনেছি সেখানে কয়েল ধরিয়েছিল কেউ। সে কারণে আগুনের স্পর্শ পেয়ে ধোঁয়া বের হতে থাকে। তবে ধারণা করা হচ্ছে— কোনো রোগীর স্বজন মশার কোয়েল এর কিছু অংশ সেখানে রেখেছিল। সেটি থেকেও আগুনের ধরতে পারে। কারণ ওই স্টিলের আলমারির ওপরে মশার কয়েল এর অংশবিশেষ পাওয়া গেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক জানান, কারা ওই স্টিলের আলমারির উপরে মালামাল জমিয়ে রেখেছে। তাদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে, গত ১৯ জানুয়ারি ঢামেক হাসপাতালের নতুন ওই ভবনে আগুন লাগে বলে খবর পাওয়া যায়। জানা যায়— ভবনের ১০৯ নম্বর কেবিনে আগুনের সূত্রপাত। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিটও ঘটনাস্থলেও চলে যায়। তবে সেই ধোঁয়া দেখেই আগুন আতঙ্কে আট তলায় ভর্তি রোগীরা চিৎকার করতে থাকেন। সেখানে অবস্থানরত স্বজনরা রোগীদের নিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করেন।

সারাবাংলা /এসএসআর/একে

আগুন আতঙ্ক টপ নিউজ ঢাকা মেডিকেল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর