বাসায় ঢুকে গৃহবধূকে খুন করে লুটপাট, ফাঁসির আসামি গ্রেফতার
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৯:২৬ | আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২২:৩০
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম নগরীতে ছয় বছর আগে বাসায় ঢুকে গৃহবধূকে শ্লীলতাহানি করে খুন এবং ডাকাতির ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘটনার পর গ্রেফতার আসামি পালিয়ে ওমানে চলে গিয়েছিল। দুই মাস আগে দেশে ফেরার পর তাকে ফাঁদ পেতে গ্রেফতার করে র্যাব।
সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফটিকা গ্রাম থেকে ওই আসামিকে গ্রেফতার করে র্যাব।
গ্রেফতার মো. ইসহাক (২৭) হাটহাজারী উপজেলার ফটিকা গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে।
২০১৬ সালের ৫ মার্চ সন্ধ্যায় নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার রউফাবাদ বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটিতে একটি ভবনের ষষ্ঠতলায় নিজ বাসায় পারভিন আক্তার (৩৬) নামে এক গৃহবধূকে খুন করে স্বর্ণলংকার, মোবাইল, ট্যাব এবং নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তার স্বামী নুরুল আলম বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তী সময়ে পুলিশ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আসামিরা হলেন মো. ইয়াসিন, মো. মনসুর, আবু তৈয়ব এবং মো. ইসহাক। ২০২১ সালের ৩ মার্চ আদালত হত্যার অপরাধে প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ড এবং ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। ইয়াসিন ছাড়া তিন আসামি শুরু থেকেই পলাতক ছিলেন।
আসামি ইসহাককে গ্রেফতারের পর সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ সারাবাংলাকে জানান, মামলার বাদি নুরুল আলমের নিকটাত্মীয় ইয়াসিন। নুরুল আলম ও তার ভাই আব্দুস শুক্কুর বিদেশে থাকতেন। ইয়াসিনকে শুক্কুর বিদেশে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু পরে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হলে শুক্কুর তাকে দেশে ফেরত পাঠান। এর ফলে ইয়াসিন দু’জনের ওপর ক্ষুব্ধ হন। প্রতিশোধ নিতে বন্ধু মনসুরের পরিকল্পনায় ইয়াসিন দু’জনকে ভাড়া করেন।
ভাড়াটিয়া হিসেবে তৈয়ব ও ইসহাক এবং ইয়াসিন ও মনসুর নুরুল আলমের বাসায় ঢুকে ছেলের সামনে গৃহবধূর শাড়ি খুলে তাকে বেঁধে রেখে লুটপাট করে। যাওয়ার সময় ওই শাড়ি দিয়ে তার শ্বাসরোধ এবং মাথায় ভারি বস্তু দিয়ে আঘাত করে চলে যায়। আহত পারভিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
ইসহাককে গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া র্যাব-৭ এর হাটহাজারি ক্যাম্প কমান্ডার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার পর ইসহাক পালিয়ে ওমানে চলে যায়। গত ডিসেম্বরে সে দেশে ফিরে আসে। তাকে ধরার জন্য আমরা ফাঁদ তৈরি করি। প্রথমে তার ছোট ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় গোপন করে বন্ধুত্ব করি। তার কাছ থেকে ইসহাকের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করি। কিন্তু দুই মাসে সে ১৭টি মোবাইলের সিম পরিবর্তন করে। তবে সম্প্রতি ছোট ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষে সে এলাকায় ফিরে আসে। আগে থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আমরা তাকে গ্রেফতার করি।’
সারাবাংলা/আরডি/একে