শহিদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে সংঘর্ষে জড়াল ছাত্রলীগ
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৪:৩৮ | আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:৫৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজে শহিদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলীগ। এ সময় ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষে অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে নগরীর চকবাজার থানা এলাকায় কলেজ ক্যাম্পাসে শহিদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে জড়িত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
মহসীন কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা কলেজের পক্ষ থেকে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে আলোচনা সভা করছিলাম। হঠাৎ বাইরে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনি। বাইরে বেরিয়ে দেখি শহিদ মিনারের আশপাশে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছে। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এর আগ থেকেই অবশ্য কিছু পুলিশ সেখানে ছিল। পরে পুলিশ তিন গ্রুপকে তিনদিকে বের করে দিতে দেখেছি।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেলা ১২টার দিকে আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শহিদ মিনারে ফুল দেন। এরপর তারা শহিদ মিনারের একপাশে জড়ো হন। উপমন্ত্রীর অনুসারী মহসীন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পলাশের নেতৃত্বে আরেক গ্রুপ তখন শহিদ মিনারে ফুল দিতে যান। শহিদ মিনারের নিচে দু’জনের মধ্যে হঠাৎ কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে মারামারি, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপে জড়ান তারা।
জানতে চাইলে আনোয়ার পলাশ সারাবাংলাকে বলেন, ‘নাছির গ্রুপের কর্মীরা বহিরাগত নিয়ে ক্যাম্পাসে এসেছিল। তারা আগেই রামদা, কিরিচ, লাঠি, কাচের বোতল জড়ো করে। আমরা ফুল দিতে যাবার পর পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের চারজন কর্মী আহত হয়েছেন।’
জনি দাশ, এম এ মনির, নুর আলম ও এইচ এম জাহিদ- এ চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার পলাশ।
এদিকে নাছির গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতা চিন্ময় ঘোষ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপের বহিরাগতরা এসে আমাদের ওপর হামলা করেছে। এখানে কেউ মহসীন কলেজের ছাত্র ছিল না। প্রথমে তারা আমাদের এক ছোট ভাইকে চড়-থাপ্পড় দেয়। কোনো কারণ ছাড়াই এটা করে তারা উসকানি তৈরি করে। এরপর আবার হামলা করে। এতে আমাদের ৫-৬ জন আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ক্যাম্পাসে যায়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে প্রথমে উপমন্ত্রীর অনুসারী গ্রুপের নেতাকর্মীদের বের করে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর নাছির গ্রুপের কর্মীদেরও বের করে দেওয়া হয়। এরপর পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।
জানতে চাইলে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস জাহান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ফুল দেওয়ার সময় ঘটনা ঘটেছে। তবে ফুল দেয়া নিয়ে কোনো সংঘর্ষ হয়নি। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে প্রথমে ঝগড়া, এরপর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। তবে আমরা দ্রুত এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে তথ্য নিয়েছি। আহতের কোনো তথ্য পাইনি।’
সারাবাংলা/আরডি/এনএস