স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষ ও সাহসী ব্যক্তিদের নিয়ে ইসি চায় সুজন
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৭:২৫ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৯:২৪
ঢাকা: অনুসন্ধান কমিটিকে পরিপূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করে অভিজ্ঞ, সৎ, সাহসী ও সুনামের অধিকারী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়ে নাগরিক সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) অনলাইনে সুজন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ আহ্বান জানান। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকারের সঞ্চালনায় এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, ড. শাহদীন মালিক, প্রফেসর সিকান্দার খান, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ড. শাহনাজ হুদা এবং রোবায়েত ফেরদৌস।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আইনে নির্দেশিত স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করার আইনের এ বিধানের কার্যকারিতা প্রদানের লক্ষ্যে অনুসন্ধান কমিটিকে যথাযথ কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করা আবশ্যক। এ সম্পর্কে আমরা কমিটির কাছ থেকে এ পর্যন্ত কোনো সুস্পষ্ট ধারণা পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘সার্চ কমিটির একজন সদস্য গণমাধ্যমকে বলেছেন, গতবার সার্চ কমিটি যেভাবে কাজ করেছিল এবারও সেভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। যা আমাদের মধ্যে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে। কারণ গত অনুসন্ধান কমিটির কাছে আমাদের কারও কারও দাবি জানানো সত্ত্বেও কমিটি কোনোরূপ স্বচ্ছতার চর্চা করেনি। এছাড়াও ২০১৭ সালের অনুসন্ধান কমিটি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেছে কি না সে ব্যাপারেও গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। তাই কমিটিকে পরিপূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা প্রদর্শনের জন্য কমিটির কার্যপদ্ধতি অবিলম্বে জনগণকে অবহিত করা প্রয়োজন।’
শাহদীন মালিক বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশে যেন একটা ভালো নির্বাচন হয়। আর এর প্রথম ধাপ হলো ভালো নির্বাচন কমিশন । এখন পর্যন্ত কমিটি যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা আগের তুলনায় ভালো। কিন্তু শুধু নাম প্রকাশ না করে কোন দল কার নাম দিয়েছে সেটাও প্রকাশ করা উচিত। এতে করে নির্বাচন সম্পর্কে দলগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি বোঝা যাবে। উদাহরণ স্বরূপ যদি দেখা যায় কোনো দল তার সঙ্গে ঘনিষ্টজনদের নাম দিয়েছে তা হলে আমরা বুঝতে পারব তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না, নিজেদের সুবিধা মত নির্বাচন করতে চায়। দলগুলো সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নাম দিয়েছে না কি নিজেদের সুবিধা হয় এমন নাম দিয়েছে, তা বোঝা এখন খুবই জরুরি।’
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সংবিধানে বলা আছে জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। কিন্তু দুইটা জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে এই অধিকার খর্ব করা হয়েছে। জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্প নেই।’
এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, ‘বিবেচনাধীন ব্যক্তিদের পরিচয়, প্রস্তাবক ইত্যাদি জানাতে হবে তা হলে স্বচ্ছতার পথে অগ্রগতি হয়েছে বলা যাবে। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থাটা নির্বাচনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে সে বিষয়ে কিছু হবে কি না সন্দেহ আছে। সেটা না হলেও একটা ভালো নির্বাচন কমিশন অন্তত হোক।’
রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘অনুসন্ধান কমিটিকে সিরিয়াস মনে হচ্ছে না। প্রকাশিত নামের তালিকায় নামের বানান ভুল, পদবি ভুল, একই নাম কয়েকবার ইত্যাদি দেখা গেছে। এগুলো তাদের এ কাজে সিরিয়াসনেসকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। কমিটিকে আস্থা অর্জন করতে হবে। আরকেটি বিষয় হলো সংবিধান পরিবর্তনের কথাও আমাদের ভাবতে হবে। প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি এবং নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করবেন না- এমন বিধান যুক্ত করতে হবে।’
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম